শিরোনাম

শিশুকে সারারাত আটকে রেখে বলৎকারের অভিযোগ, যুবক আটক - Chief TV - চিফ টিভি

ছবিঃ প্রতিনিধি
আসাদুল্লাহ সনি, চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধিঃ

চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর এলাকার তেঁতুলতলায় ১০ বছর বয়সী এক শিশুকে সারারাত ঘরের মধ্যে আটকে রেখে বলৎকারের অভিযোগ উঠেছে এক যুবকের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) সকালে সদর মডেল থানা পুলিশ ওই শিশুকে যুবকের ঘর থেকে উদ্ধার করে। এ ঘটনায় আটক করা হয়েছে ওই যুবককে। আটককৃত যুবক চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর এলাকার তেঁতুলতলায় মহল্লার সাহালাল আলীর ছেলে যুবক ইমন (২১)। 

জানা যায়, সোমবার (২৫ মার্চ) এশার নামাজ পর থেকেই নিখোঁজ ছিল একটি হাফেজিয়া মাদরাসার হেফজ বিভাগের ওই শিশু। নিখোঁজ শিশুর পরিবার আত্বীয় স্বজন, মসজিদ, মাদরাসায় খুঁজেও কোন সন্ধান পায়নি। এমনকি নিখোঁজ সংবাদ জানাতে মাইকিং করা হয় মসজিদের মাইকে। এদিকে, স্থানীয়রা সর্বশেষ তাকে ইমনের সাথে যেতে দেখেছিল। ইমনকে সন্দেহ হলে তার বাসায় লোকজন নিয়ে যায় ওই শিশুর পরিবার। কিন্তু ওই শিশুকে সেই বাসায় পাওয়া যায়নি। 

পুলিশকে সাথে নিয়ে রাত ২টার দিকে আবার ইমনের বাসায় গেলেও সন্ধান মেলেনি ওই শিশুর। জানা যায়, সেসময় তাকে বাক্সের মধ্যে ভরে রেখেছিল ইমন৷ শিশুর পরিবারের অভিযোগ, শিশুকে পটকা দেয়ার নাম করে নিয়ে গিয়ে আটকে রাখা হয় ঘরে। এমনকি শারিরীকভাবে নির্যাতনের পর সকালে ফেরত দেয়া হয় মাদরাসা ছাত্রকে। 

ভুক্তভোগী শিশুর মা বলেন, রাতে নামাজ পড়ে এসে হঠাৎ বাসা থেকে আসছি বলে চলে যায়। এরপর অনেক রাত হয়ে গেলেও আর বাসায় না ফিরলে খোঁজাখুজি শুরু করি। সে যে মাদরাসায় পড়ে সেখানেও সন্ধান করে তাকে পাওয়া না গেলে স্থানীয়রা কয়েকজন ইমনের সাথে যাওয়ার কথা জানায়। রাতেই কয়েক দফায় নিজেরা এমনকি পুলিশ নিয়ে গেলেও ছেলেকে বের করেনি। পরে সকালে আবার পুলিশ নিয়ে গেলে ছেলে বের করে দেয়। 

তিনি আরও বলেন, সারারাত ছেলের জন্য ছোটাছুটি করেছি, কিন্তু ছেলে বের করে দেয়নি। আমার ছেলেকে বাক্সের মধ্যে ভরে রেখেছিল। এছাড়াও শারীরিক নির্যাতন করা হয়েছে। আমি এর উপযুক্ত শাস্তি দাবি করছি। 

শিশুর দাদি জানান, গত কয়েকদিন থেকে ইমনের সাথে মিশেছে আমার নাতি। তাকে পটকা দেয়ার কথা বলে এশার নামাজ পর বাসা থেকে ডেকে এনেছিল। বারবার বাসায় যখন যায়, তখন বাক্সের মধ্যে ভরে রেখেছিল। পরে বাধ্য হয়েই সকালে ছেলেকে নিজেরাই বের করে দেয়। 

এদিকে ইমনের পরিবারের দাবি, জোর করে নয়, স্বেচ্ছায় এসে ঘরের মধ্যে সারারাত ছিল ওই শিশু। মা-দাদির মার খাওয়ার ভয়ে বাইরে আসেনি। ইমনের মা বলেন, ওই শিশুকে ইমন বাসায় এনেছিল, তা আমরাও জানতাম না। রাতে আমরা কয়েক দফায় তার ঘরে খুঁজতে গেলে শিশুটি নিজেই বাক্সের মধ্যে লুকিয়ে ছিল। এমনকি পুলিশ এসেছিল তখন, ইমন ও তাকে যেন মারধর করা না হয়, তাই সে স্বেচ্ছায় লুকিয়ে ছিল বাক্সের মধ্যে৷ 

প্রাথমিক তদন্তে বলৎকারের সত্যতা পাওয়া গেছে বলে জানায় পুলিশ। চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিন্টু রহমান বলেন, রাতে বাসায় নিয়ে আসার পর শিশুকে বলৎকার করেছে ইমন। পরে পুলিশ ও তার পরিবার ঘরে খুজতে গেলে দুইজন মিলে পরামর্শ করে বাক্সে লুকিয়ে থাকে। প্রাথমিকভাবে বলৎকারের উদ্দেশ্যই নিয়ে যাওয়ার কথা জানা গেছে। 

তিনি আরও বলেন, এবিষয়ে তদন্তকাজ শুরু করেছে পুলিয়। মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) বিকেলে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানায় শিশু ধর্ষণ আইনে মামলা দায়ের করেছেন ওই শিশুর মা। আটককৃত ইমনকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করেছে পুলিশ।


কোন মন্তব্য নেই