শিরোনাম

বগুড়ায় টাকা নিয়ে ধর্ষণের ঘটনা মিমাংসার অভিযোগ ইউপি সদস্য, পুলিশ ও স্থানীয় নেতার বিরুদ্ধে - Chief TV - চিফ টিভি

বগুড়ায় টাকা নিয়ে ধর্ষণের ঘটনা মিমাংসার অভিযোগ ইউপি সদস্য, পুলিশ ও স্থানীয় নেতার বিরুদ্ধে - Chief TV - চিফ টিভি
ছবিঃ প্রতিনিধি
শুভজিৎ সরকার, চিফ টিভিঃ

বগুড়ার গাবতলীতে স্কুল পড়ুয়া ছাত্রীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে একাধিকবার ধর্ষণের ঘটনায় টাকা নিয়ে মীমাংসার অভিযোগ উঠেছে ইউপি সদস্যসহ চারজনের বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ ক্ষমতার প্রভাব দেখিয়ে ইউপি সদস্য উজ্জ্বল ছেলে পক্ষের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে মেয়ের পরিবারকে বাধ্য করে মিমাংসা করতে।

ভুক্তভোগী ওই মেয়ে হলেন, গাবতলী থানাধীন সুখানপুকুর ইউনিয়নের বাসিন্দা এবং সে নবম শ্রেণির ছাত্রী। এছাড়াও জানা যায়, একই উপজেলার হাপানিয়া গ্রামের সামছুলের সাথে তার অবৈধ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সম্পর্ক চলাকালীন সময়ে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তাকে ঢাকায় পালিয়ে নিয়ে যায় সামছুল এবং সেখানে তাকে বিয়ে না করে প্রায় ২ মাসের মতো মানসিক নির্যাতনসহ একাধিকবার তার সাথে শারীরিক সম্পর্ক করে। 

এছাড়াও ঢাকায় থাকাকালীন সময়ে জোরপূর্বক তাকে আরোও ৪-৫ জনের সাথে একাধিকবার শারিরীক সম্পর্ক করতে বাধ্য করে তার প্রতারক প্রেমিক সামছুল। 

পরবর্তীতে মেয়েটি কোনোভাবে সেখান থেকে পালিয়ে নিজ বাড়িতে চলে আসে এবং ঘটে যাওয়া সকল বিষয় তার পরিবারকে জানায়। মেয়ের পরিবারটি নিম্নবিত্ত হওয়ার কারনে ঘটে যাওয়া ঘটনা নিয়ে তেমন কোনো প্রতিবাদ করতে চায়নি এবং স্থানীয় ইউপি সদস্য উজ্জ্বল, পুলিশ সদস্য এ.এস.আই মিথুন, আরেক ইউপি সদস্য সিদ্দিকুল এবং স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা পলাশ রায় পলানের জোর জবরদস্তিতে মেয়ের বিয়ের কথা চিন্তা করে মিমাংসা করতে রাজি হয় তার পরিবার।

অন্য দিকে ছেলে পক্ষের কাছ থেকে মিমাংসা বাবদ ১ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা নেয় ইউপি সদস্য উজ্জ্বল এবং পুলিশ সদস্য এ.এস.আই মিথুনসহ অনান্যরা।

মেয়েপক্ষকে টাকা দেওয়ার মাধ্যমে আপোষ করার চুক্তিতে সুখানপুকুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আলমগীর এর পার্সোনাল (পার্টি) অফিসে দুই পক্ষকে মিমাংসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়।

উক্ত ঘটনায় মিমাংসা বাবদ ১ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা ছেলে পক্ষ থেকে নেওয়া হলেও মেয়ে পক্ষকে ৫৫ হাজার টাকা দিয়ে মিমাংসা করিয়ে দেয় উপরোক্ত ৪ জন ব্যক্তি এবং বাকি ১ লক্ষ ৫ হাজার টাকা তারা ৪ জন নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করে নেয়। 

এছাড়াও পরবর্তীতে এ.এস.আই মিথুন ভুক্তভোগী মেয়ের পরিবারের থেকে অতিরিক্ত আরো ৫ হাজার টাকা নেয় জানান ভুক্তভোগীর পরিবার ।

বিষয়টি নিয়ে এ.এস.আই মিথুন বলেন, তার বিরুদ্ধে আনা সকল অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। তিনি এই বিষয়ে কিছুই জানেন না। এমনকি এ ধর্ষণের বিষয়ে তিনি লিখিত কোন অভিযোগ পাননি। এ ঘটনা সম্পর্কে তিনি অবগত নন।

এ বিষয়ে গাবতলী থানার অফিসার ইনচার্জ আবুল কালাম আজাদ বলেন, তিনি এ বিষয়ে অবগত নন। এ বিষয়ে থানায় লিখিত কোন অভিযোগ পত্র তিনি পাননি। তবে তার কোন পুলিশ সদস্য যদি এমন কোন দুর্নীতি কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকার ঘটনার সত্যতা প্রমাণিত হয়। তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে । 

এ বিষয়ে সুখানপুকুর ৬ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সিদ্দিক বলেন, তার এবং  এ.এস. আই মিথুন,৮ নং ওয়ার্ডের সদস্য  উজ্জ্বলসহ আওয়ামী লীগ নেতা পলানের উপস্থিতিতে ছেলেপক্ষ এবং মেয়ে পক্ষের মধ্যে আপোষের জন্য ১লক্ষ ২০ হাজার টাকা দেওয়ার চুক্তি হয়। কিন্তু পরবর্তীতে ১লক্ষ ৬০ হাজার টাকা নেওয়ার বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না।

এ বিষয়ে ইউপি সদস্য নুরুল ইসলাম উজ্জ্বল ও পলাশ রায় পলানের সঙ্গে তার ব্যবহৃত মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।

উল্লেখ্যঃ ইউপি সদস্য নুরুল ইসলাম উজ্জ্বল ও পলাশ রায় পলান বর্তমান পর্নগ্রাফি ও চাঁদাবাজি মামলায় পলাতক রয়েছেন।

কোন মন্তব্য নেই