শিরোনাম

বগুড়ায় ২০ বছর যাবত জীবনের সমস্ত কিছু দেওয়ার পরেও ঠাই হলো ফুটপাতে - Chief TV - চিফ টিভি

বগুড়ায় ২০ বছর যাবত জীবনের সমস্ত কিছু দেওয়ার পরেও ঠাই হলো ফুটপাতে - Chief TV - চিফ টিভি
                                                                                  ছবিঃ প্রতিনিধি
 শুভজিৎ সরকার,স্টাফ রিপোর্টারঃ

বগুড়ায় পিতার মৃত্যুর পর অছিয়ত ছেলেকে জোরপূর্বক বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। জানা যায়, বগুড়া সদর থানাধীন নুনগোলা ইউনিয়নের আশোকোলা এলাকার মৃত হাতেম আলীর পালিত ছেলে ছিলো। আব্দুল গফুর ২০ বছর যাবত মৃত হাতেম আলীর পালিত ছেলে হিসাবে বাড়িতে থাকতো এবং সেখানে সমস্ত  কাজ করত। হাতেম আলীর মৃত্যুর পর তার ছেলেরা হঠাৎ তাকে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ায় ভুক্তভোগী আব্দুল গফুর বগুড়া সদর থানায় চার জনের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ করেন। 

অভিযুক্ত ব্যক্তিরা হলেন, বগুড়া সদর থানার নুনগোলা ইউনিয়নের আশোকোলা এলাকার মৃত হাতেম আলীর ছেলে বাদশা মিয়া (৬৫), আব্দুস সোবাহান (৬০), একরাম হোসেন (৪০), সাজু মিয়া (৩৫)।

উল্লেখ্য, অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বগুড়া সদর থানার নুনগোলা ইউনিয়নের আশোকোলা পূর্ব পাড়ার হতেম আলী প্রায় ২০ বছর পূর্বে বাঘোপাড়া বন্দর হতে আব্দুল গফুরকে ছোট বেলায় নিজ বাড়ীতে লালন পালন করার জন্য বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে নিজের ছেলের মতই গফুরকে লালন পালন করতেন মৃত হাতেম আলীর পরিবার। 

শর্ত ছিল নিজের ছেলেদের মতই গফুরকে বাড়ি-ঘর নির্মাণ করে দিবে। তাই ছোট থেকেই আব্দুল গফুর মৃত হাতেম আলীর সাংসারিক যাবতীয় কাজ কর্ম করে আসছিলেন।

 হঠাৎ হাতেম আলী অসুস্থ হয়ে পড়লে তার ৪ ছেলেকে হাতেম আলী নিজেই অছিয়ত করে যায় যে,"তার মৃত্যুর পর যেন তারা পালিত ছেলে আব্দুল গফুরকে তার রেখে যাওয়া জায়গায় বাড়ি- ঘর নির্মাণ করে দেয় এবং বসবাস করার জন্য সুব্যবস্থা করে দেন।" কিন্তু হাতেম আলীর মৃত্যুর পর আব্দুল গফুরকে পিতার অছিয়ত পুত্ররা অমান্য করে এক কাপড়ে জোরপূর্বক বের করে দেন। 

সর্বশেষে তিনি গত ২৫ ফেব্রুয়ারী সকাল ১০ টায় বিবাদীগণের বাড়ীতে গিয়ে পিতার অছিয়ত পালন করার জন্য কাকুতী-মিনতী করলে তারা গালি গালাজ করে বাড়ি হতে আবারো বের করে দেন। তিনি নিরুপায় হয়ে গত ২৩ এপ্রিল বগুড়া সদর থানায় ৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দাখিল করেন। 

বাড়ীঘর হতে বিতারিত ও প্রতারিত আব্দুল গফুর বর্তমানে বগুড়া রেলওয়ে ষ্টেশনের বিভিন্ন দোকানে কাজ করে দুবেলা খেয়ে না খেয়ে ফুটপাতে ঘুমায়। 

এ বিষয়ে আব্দুল গফুর জানায়, ২০ বছর যাবৎ একদম ফ্রি শ্রম দিয়েছে। বার-বার পিতার অছিয়ত পালন করার জন্য পুত্রদের দ্বারস্থ হই কিন্তু তারা আমার সাথে কুকুরের মত ব্যবহার করে বের করে দেয়। তিনি এ-ব্যাপারে প্রশাসন মানবাধিকার সংস্থাসহ সকলের দৃষ্টি আকর্ষন করে বলেন সে যেন তার অধিকার ফিরে পায়।

এ বিষয়ে, অভিযুক্ত ব্যক্তিরা কেউ চিফ টিভির সঙ্গে কথা বলতে রাজি হন না। তারা কেন কথা বলতে চান না জানতে চাইলে, ইউপি চেয়ারম্যানকে দায়ী করে বলেন, "আমরা চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলেছি তিনি আমাদেরকে এ বিষয় নিয়ে অন্যকারো সঙ্গে কথা বলতে বারণ করেছেন।চেয়ারম্যানের সঙ্গে আমরা থানায় গিয়ে মীমাংসা হব। "

এ বিষয়ে নুনগোলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বদরুল আলহাজ্ব বলেন, তিনি এ ব্যাপারে কিছুই জানেন না। বাদী বা বিবাদী কেউ কখনোই তাকে এ বিষয়ে কিছু জানাননি।

তিনি কখনো তাদেরকে কারো সঙ্গে কথা বলতে বারণ করেননি। এটি সম্পূর্ণই মিথ্যা। 

স্থানীয়রা জানান, আব্দুল গফুর একজন ভালো মনের মানুষ। ছোট থেকেই মৃত হাতেম আলীর বাড়িতে থাকতো। তার বাড়ির সমস্ত কাজ সে করতো। তার কাজের মূল্য স্বরূপ চোখে পড়ার মত কিছুই সে পায়নি। অধিকার সূত্রে না হলেও তার কাজের মূল্য হিসাবে তার প্রাপ্য পাওনা পাওয়ার দাবি করেন এলাকাবাসী।

কোন মন্তব্য নেই