ডিউটিকালীন সোর্সকে স্যার ডাকেন পোশাকপরা পুলিশ, পরিচয় দিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছে টাকা, নিরব প্রশাসন - Chief TV - চিফ টিভি
বগুড়া জেলা জুড়ে পুলিশ সদস্যদের সাথে সক্ষ্যতা গড়ে তুলেছেন সোর্স, তবে এখন এই জেলাতে যেনো পুলিশের চাইতে সোর্সদের ক্ষমতাই বেশি। বিভিন্ন সময় পোশাক পরিহিত পুলিশের সাথে সাদা পোশাকে নানা ভাবে বিভিন্ন অভিযানে গিয়ে বনে যান অফিসার।
বিশেষ এক অনুসন্ধানে বেড়িয়ে এসেছে থলের বিড়াল। গত বৃহস্পতিবার ৯ মে বগুড়ার মহাস্থানে মেলা কে উপেক্ষা করে গাজা সহ বিভিন্ন নেশা জাতীয় মাদকদ্রব্য বিক্রি চলছিলো, এমন এক সময় সেখানে হাজির হয় সাদা পোশাকে থাকা পুলিশসহ পোশাক পরিধান করা পুলিশ সদস্য।
অভিযানের সময় পোশাক পরিহিত পুলিশ সদস্যরা সেই সাদা পোশাকে থাকা সোর্সকে স্যার বলে ডাকা শোনা যায়। তবে কী এই সোর্সরা তাদের চাইতেও বড় পাওয়ারফুল?
দেহ ব্যবসা চলছে এমন সংবাদ পেয়ে মহাস্থান বাগান বাড়িতে এক বাসায় অভিযান চালায়, অভিযানে সত্যতা পেয়েও তাদেরকে আটক না করেই টাকা পয়সার মাধ্যমে তাদেরকে ছেড়ে দেয়া হয়।
আবার ঘটনা টি জেনে যাওয়া এক সাংবাদিককে ৫শ টাকা দিয়ে বলা হয় চুপ থাকতে। ওদেরকে নিয়ে গিয়ে কোনো লাভ নেই। গোপন ক্যামেরায় ধারণকৃত এক ভিডিও তে শোনা যায়, ওই সোর্স বলছে , তুই এই দিকে আয় সব সমস্যা আমি সমাধান করে দেবো।
এরপর মাদক সেবীদের আস্থানায়, ইয়াবা সেবন করছে এমন সময় পুলিশের অভিযান, অভিযানের সময় সেখানে থাকা সাংবাদিককে বলা হয় আমাদের ভিডিও কইরেন না, ক্যামেরা টা অফ রাখেন ভিডিও করে করবেন কী। তারপর শুরু হয় গোপন ক্যামেরায় রেকর্ড। সেই মাদক সেবীদের টাকা নিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়। বলা হয় আজকের দিনে এগুলো করবেই। পড়ে সেখান থেকে বের হয়ে আসে পুলিশ ও সংবাদকর্মীরা।
পড়ে সংবাদকর্মীদের দেয়া হয় তার ফোন নাম্বার। বলা হয় রাতে আরো এক জায়গায় অভিযান করবো আপনারা আমাদের সাথে থাকবেন। রাত অনেক গভীর। তাদের সারা না পেয়ে সংবাদকর্মীরা ফোন দেয় তাদের দেয়া নাম্বারে।, ফোন রিসিভ করে বলেন আজ আর অভিযান করবো না আপনারা চলে যান।
এই আশিকের সম্পর্ক বড় বড় বিপুল পরিমাণ গণমাধ্যমকর্মীদের সাথে। শুরু হয় অনুসন্ধান জানা যায় যেখানে অভিযান করার কথা ছিলো সেখান থেকে টাকা নিয়ে তাদের ব্যবহৃত ভিজিটিং কার্ড দিয়ে তাদের সাথে যোগাযোগ করবার জন্য। সেই ভিজিটিং কার্ডের উপরে বানানো ছিলো ভুল। পুলিশের জায়গায় লেখা ছিলো পুশিকে। ভিজিটিং কার্ডটি ছিলো শিবগঞ্জ থানার পুলিশ উপ-পরিদর্শক সোহরাব হোসেনের।
কথা বলার জন্য কল করা হয় সাব ইন্সপেক্টর সোহরাবের ব্যবহৃত ফোন নাম্বারে , তবে একাধিকবার তার নাম্বারে কল করলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায় নি।
এবার খোজ করা হয় অভিযানের সময় পুলিশ পরিচয় দেয়া সাদা পোশাকে থাকা আশিকের, আশিককে কল দেয়া হয় আশিক জানায় তিনি ওসির সাথে দেখা করতে থানায় যাচ্ছেন, পরে কথা বলতে বলে ফোন কেটে দেয়। আবারও যোগাযোগের চেষ্টা করলে কল রিসিভ করেন না তিনি।
তাকে যাচাই করার জন্য তার ছবি পাঠানো হয় মোকামতলা তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ আশিক ইকবালের কাছে ও শিবগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জকে।
কথা বলা হয় শিবগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ এর সাথে। তিনি বলেন আমি এই ব্যক্তিকে চিনি না। ছবি তে থাকা ব্যক্তি তার থানার কোন পুলিশ সদস্য না।
এরপর কথা বলা হয় মোকামতলা তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ আশিক ইকবালের সাথে। প্রথমে আশিক ইকবাল বলেন সে বিভিন্ন ভাবে বিভিন্ন জায়গায় অপকর্মে জড়িত। তার সাথে তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ এর কোনই সম্পর্ক নেই। তাৎক্ষনিক ভাবে আবারো কল ব্যাক করে তিনি বলেন ভাই নিউজ করার কোন দরকার নাই। আপনি এক সময় আসেন তাকে নিয়ে আপনারা সহ আমরা বসে কথা বলবো।
উল্লেখ্যঃ জেলার বিভিন্ন জায়গায় কখনো ডিবি, কখনো সিভিল ডিউটির পুলিশ সেজে বিভিন্ন জায়গাতে সাধারণ মানুষকে হয়রানিসহ বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে, ভয় ভিতী দেখিয়ে তাদের থেকে হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে বিপুল পরিমাণ টাকা। এ ব্যাপারে বেশ কিছু থানায় মামলা করা হলেও পুলিশের কাছে মিলেনি তাদের খবরা খবর।
গোয়েন্দা শাখার পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন অপকর্মের বিষয়ে জানতে চাইলে জেলার গোয়েন্দা শাখার অফিসার ইনচার্জ মুস্তাফিজ হাসান বলেন, আমরাও বিভিন্নভাবে শুনতে পাচ্ছি ডিবি পরিচয় দিয়ে সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষদের থেকে টাকা হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে। তবে এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট থানা ও আমরা কাজ করছি যেনো এই ধরনের অপকর্ম না হয়। এবং সাধারণ মানুষ ভালোভাবে রাস্তায় চলাচল করতে পারে। সেই সংগে তিনি আরো বলেন যদি এই ধরনের অপকর্মের সাথে ডিবির কেহ যুক্ত থাকেন তাইলে আইন অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
২০২৪ সালের শুরুতে এমন একটি ঘটনা ঘটে বগুড়া সদর থানা এলাকায়, একটি বিকাশ ব্যবসায়ীর থেকে রাত আনুমানিক ৩ টার সময় পুলিশ পরিচয়ে ভয় দেখিয়ে ও মিথ্যা মামলা দেবে বলে, সেই ব্যবসায়ীর থেকে হাতিয়ে নেয়া হয় মোটা অংকের টাকা। পড়ে জানা যায় তারা পুলিশ সদস্য না। এই ব্যাপারে সদর থানায় একটি মামলাও করেন ভুক্তভোগী, তবে এখনও মেলেনী তাদের পরিচয়।
সচেতন মহল বলছেন এই ধরনের কার্যক্রম চলতে থাকলে সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ ঘড় থেকে বের হতে পারবে না। দ্রুত তাদেরকে আইনের আওতায় নিয়ে এসে কঠিন শাস্তি দেয়া হোক।
কথা বলা হয় বগুড়া সদর থানার অফিসার ইনচার্জ এর সাথে, তিনি জানান বিষয়টি নিয়ে স্টেডিয়াম ফাড়ি কাজ করছে আপনি তাদের সাথে কথা বললে বিস্তারিত জানতে পারবেন।
কথা বলা হয় স্টেডিয়াম ফাড়ির সাব ইন্সপেক্টর শামিম এর সাথে তিনি জানান, বিকাশ ব্যবসায়ীর থেকে পুলিশ পরিচয় দিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকা হাতিয়ে নেয়া। সেই মামলা আমি তদন্ত করছি। একজন কে আমরা গ্রেফতার করেছি তবে ঘটনার মূল হোতাকে আমরা এখনো আটক করতে পারিনি। আমরা টাকা উদ্ধার ও মূল হোতাকে গ্রেফতার করতে কাজ করছি। আশা করছি খুব শিগগিরই এই চক্রকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হবো।
পুলিশ পরিচয় দেয়া আশিক এর বিষয়ে শিবগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ আ: রউফ বলেন, কোনো সোর্স পুলিশ পরিচয় দিলে আর তা প্রমানিত হলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। দেহ ব্যবসায়ীর থেকে টাকা নিয়ে ভিজিটিং কার্ড দেয়া পুলিশ সদস্য সোহরাবের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন যদি সোহরাব এ ধরনের অপকর্ম করে থাকে, তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জরুরী
কোন মন্তব্য নেই