প্রত্যাশা ও প্রাপ্তির তিন বছরে (খুবি) উপাচার্য- Chief TV - চিফ টিভি
![]() |
ছবি-প্রতিনিধি |
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২তম উপাচার্য হিসেবে ২০২১ সালের ২৫ মে যোগদান করেন প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন। করোনা মহামারীর এক স্থবির পরিস্থিতির মধ্যে দায়িত্ব গ্রহণের পর শিক্ষা কার্যক্রমকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনাই ছিলো তার প্রধান চ্যালেঞ্জ। এছাড়া গবেষণায় উদ্যম সৃষ্টি, ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন কাজ সচল করাও ছিলো বড় চ্যালেঞ্জ। আবার এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্য থেকে নিযুক্ত দ্বিতীয় উপাচার্য হওয়ায় তার কাছ থেকে শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশাও ছিল বেশি। কর্মমেয়াদের তিন বছরে এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশার কতটুকু পূরণ করতে পেরেছেন তা তুলে ধরেছেন চিফ টিভি’র খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি একরামুল হক।
সাধিত হয়েছে একাডেমিক অগ্রগতি । প্রথমেই দায়িত্বগ্রহণের ৩ বছরপূর্তি উপলক্ষে স্যারকে অনি:শেষ অভিনন্দন জানাই। এ ৩ বছরে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে দৃশ্যমান পরিবর্তন লক্ষ করা যায়। যেভাবে একাডেমিক অগ্রগতি সাধিত হয়েছে, একই ভাবে বাহ্যিক অবকাঠামোগত উন্নয়নের ফলাফল আমরা দেখতে পাই। শিক্ষাপদ্ধতিতে "আউট কাম বেইজড" কারিকুলাম চালু হয়েছে। যার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা একটি কোর্স শেষে কি কি শিখতে পারছে ,সে বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা পাবে। এছাড়া স্যারের উল্লেখযোগ্য অবদান -"গবেষণা ক্ষেত্র"। দায়িত্বকালীন সময়ে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় সমগ্র বাংলাদেশ তথা সমগ্র বিশ্বের মধ্যে ভিন্ন ভিন্ন শাখায় র্যাঙ্কিং এ সর্বোচ্চ স্থান অর্জন করছে। যা আমাদের জন্য অত্যন্ত গৌরবের, সম্মানের। আমি ইতিহাস ও সভ্যতা ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থী। ইতিহাস একটি জাতির পরিচয় বহন করে। আধুনিক গবেষণার মাধ্যমে এ ইতিহাস চর্চা আমাদের জাতি-রাষ্ট্র সর্বোপরি সমাজকে ঐতিহ্য সম্পর্কে জাগ্রত করে। তাই স্যারের নিকট প্রত্যাশা থাকবে, সকল ডিসিপ্লিনের গবেষণায় সমান সহযোগিতা প্রদানের মাধ্যমে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশ্বমানের শিক্ষা নিশ্চিত করবেন।
তাসনিয়া জামান শাশ্বতী ৪র্থ বর্ষ, ইতিহাস ও সভ্যতা ডিসিপ্লিন সমাধান হয়নি আবাসন সঙ্কটের খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহমুদ হোসেন তার দায়িত্বের তিন বছর পূর্ণ করেছেন। এই সময়ে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়কে গবেষণার দিক থেকে সর্বোচ্চ পর্যায়ে নিয়ে গেছেন। গবেষণা বরাদ্দ বাড়ার ফলে শিক্ষকদের পাশাপাশি শিক্ষার্থীরা আরও উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন। কিন্তু পর্যাপ্ত আবাসন সংকট আমাদের শিক্ষার্থীদের অনেকটা ভোগান্তির কারণ হয়ে পড়েছে। এই সমস্যাটি সমাধান করলে আশা করি আমাদের খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় আরও উন্নতির দিকে এগিয়ে যাবে।
রাহুল কুমার সরকার, তৃতীয় বর্ষ, ফরেস্ট্রি অ্যান্ড উড টেকনোলজি ডিসিপ্লিন গড়েছেন পরিচ্ছন্ন ক্যাম্পাস । ক্যাম্পাসে আসার পর থেকে এ পর্যন্ত অভাবনীয় পরিবর্তন নিজ চোখে দেখেছি। পুরো ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে ডাস্টবিন স্থাপন করা হয়েছে, এতে ক্যাম্পাস আগের থেকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকে। এছাড়াও রাস্তাঘাট সব কিছু অনেক সুন্দর করে সংস্কার করা হয়েছে। লেক, পুকুর, ডোবা এগুলো পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা হয়। ক্যাফের পাশে সুন্দর পদ্মপুকুর ক্যাম্পাসের সুন্দর্যকে অনেক বাড়িয়ে দিয়েছে। সুন্দর মনোরম গোলপতার ক্যাফেটেরিয়া, গবেষণাগার, নতুন মেডিকেল সেন্টার নির্মান করা হয়ছে। ক্যাম্পাসের সব জায়গায় ফুল গাছ, ফল গাছে পরিপূর্ণ। বিভিন্ন ঋতুতে বিভিন্ন ফুল ক্যাম্পাসের সৌন্দর্যকে আরও বাড়িয়ে দেয়। কিছুদিন আগে চারিদিকে সুর্যমুখী ফুলে ভরে ছিল। সব মিলিয়ে এই অতি অল্প সময়ে অভাবনীয় পরিবর্তন হয়েছে।
তাহেরুননেছা সাথী, তৃতীয় বর্ষ, সয়েল, ওয়াটার অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট ডিসিপ্লিন নিশ্চিত হয়নি প্রশাসনিক স্বচ্ছতা । এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নিযুক্ত ভিসি হওয়ায় ড. মাহমুদ হোসেন স্যারের প্রতি প্রত্যাশাটাও বেশি থাকাটাই স্বাভাবিক। এর অনেক কিছুই হয়ত পূরণ হয়েছে আবার অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে তেমন কোনো পরিবর্তন হয়নি। আবাসন সংকট চরম মাত্রা ধারণ করেছে, দেশের এ অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে ১ম ও ২য় বর্ষের মধ্য ও নিম্ন আয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য অসহনীয়। আবাসনের দায়িত্বে থাকা সম্মানিত শিক্ষকদের ডিসিপ্লিন-প্রীতির দুর্নীতি নিত্যদিনের ঘটনা। প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে শিক্ষার্থীদের অসহযোগিতা, সময়ক্ষেপণ ও অসম্মানজনক উক্তি নিয়মিত ঘটনা। শিক্ষার্থীরা একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণ, তাদের প্রতি এত অবহেলা কেন? সবার জন্য স্বচ্ছতা ও সুশাসন একান্ত প্রয়োজন। আশা করি, সম্মানিত ভিসি মহোদয়ের সঠিক ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীবান্ধব ক্যাম্পাসে পরিণত হবে, যেখানে ছাত্রদের বিশ্ববিদ্যালয় আইন জানার অধিকার জানা থাকবে, তাদের সাথে ঘটা অন্যায়ের শাস্তি তারা দেখতে পারবে। গবেষণার পাশাপাশি নৈতিকা ও মূল্যবোধেও খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় এক নম্বর হবে, এটাই প্রত্যাশা।
মো. জিহাদ হাসান, চতুর্থ বর্ষ, ইংরেজি ডিসিপ্লিন গবেষণার পরিবেশ সৃষ্টিতে ছিলেন একাগ্র। আমাদের খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহমুদ হোসেন স্যার এক অসাধারণ অনুকরণীয় ব্যক্তিত্বের অধিকারী। স্যারের উদ্ভাবনী চিন্তাশক্তি আর কর্মস্পৃহা আমাদের খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়কে বহুদূর এগিয়ে নিয়ে গেছে। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়কে বিশ্বমানে উন্নীত করতে স্যারের নেয়া বেশকিছু উদ্যোগের মধ্যে রয়েছে- বিশ্বমানের ওবিই কারিকুলাম বাস্তবায়ন করা, সকল বিষয়ে গবেষণার সুযোগ সৃষ্টি করা, ই-নথি চালু করা, বিশ্ববিদ্যালয়কে ডিজিটাইজেশনের আওতায় আনা এবং বিশ্ববিদ্যালয়কে গ্রিন ক্যাম্পাসে রূপান্তর করা। তিনি শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশার সবটুকু পূরণ করে আমাদের উপহার দিয়েছেন একটি সেশনজটমুক্ত কারিকুলাম। আমাদের গবেষক, উপাচার্য স্যারকে এখনো সুন্দরবনের কর্দমাক্ত পানিতে নেমে গবেষণা করতে দেখা যায়! গবেষণার পরিবেশ সৃষ্টিতে স্যারের একাগ্রতা সত্যিই প্রশংসার দাবিদার। স্যারের কর্মতৎপরতায় সম্প্রতি টাইমস হায়ার এডুকেশনের বৈশ্বিক ইয়াং ইউনিভার্সিটি র্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে শীর্ষ স্থান দখল করে নিয়েছে আমাদের খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়। আমরা আশাবাদী ভবিষ্যতে মাননীয় উপাচার্যের হাত ধরে সাফল্যের ছোঁয়ায় উন্নতির সর্বোচ্চ শিখরে পৌঁছে যাবে আমাদের খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়।
কোন মন্তব্য নেই