শিরোনাম

বদলগাছীতে অভিনব কায়দায় প্রতারণা,টাকা নিয়ে উধাও - Chief TV - চিফ টিভি

 

বদলগাছীতে অভিনব কায়দায় প্রতারণা,টাকা নিয়ে উধাও
ছবি-প্রতিনিধি
বুলবুল আহমেদ, বদলগাছী (নওগাঁ) প্রতিনিধিঃ 

বদলগাছীতে অভিনব কৌশলে এলাকার সাধারন মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে সোহাগ মিলন (নিশান) নামের এক যুবকের বিরুদ্ধে । এখন তার ঘরে ঝুলছে তালা । বন্ধ রয়েছে তার মোবাইল ফোন। তিনি উধাও হওয়ার পর তার প্রতারণার শিকার ব্যক্তিরা পাওনা টাকার জন্য ভিড় করছে বাড়িতে। প্রতারণার দায়ে অভিযুক্ত ব্যক্তি আব্দুস সামাদের ছেলে সোহাগ মিলন নিশান। তার বাড়ি বদলগাছী উপজেলার উত্তর বলরামপুর গ্রামে।

অভিযোগ ও ভুক্তভোগী সূত্রে জানা যায়, সোহাগ মিলন নিশান কৃষি কাজের সাথে জড়িত । কৃষি কাজের পাশাপাশি স্থানীয় দ্বীপগঞ্জ বাজারে তার ভাইয়ের ডেকোরেটর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বসতেন তিনি। ডেকোরেটর ব্যবসা  দুই-ভাই এর যৌথ বলে পরিচয় ব্যবহার করে প্রতারণার নতুন ফাঁদ পাতা শুরু করেন নিশান।  

এটা ছিল তার প্রতারণার একটা কৌশল। কখনো গরুর খামার কখনো ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের জন্য দরকার টাকার, স্থানীয়দের ইমোশনাল ব্ল্যাকমেইল করে তাদের দ্বারা বিভিন্ন এনজিও থেকে তুলে নেন মোটা অঙ্কের ঋণ। ভুক্তভোগীদের নামে তোলা ঋনের কিস্তির টাকা নিয়মিত পরিশোধ করার কথা থাকলেও সোহাগ মিলন নামের ঐ যুবক দু-একটি কিস্তি দেওয়ার পর হঠাৎ উধাও হয়েছেন। গ্রামের সহজ-সরল মানুষকে প্রলোভন দেখিয়ে তাদের মাধ্যমে কিস্তি তুলে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়ে পালিয়ে গেছেন তিনি । নিশানের এমন প্রতারণার সর্বস্বান্ত কয়েকটি পরিবার ।

ভুক্তভোগী ইদ্রিস আলী বলেন, আমি খুব কষ্ট করে আমার সন্তানদেরকে নিয়ে জীবনযাপন করি। নিশান আমার কাছে থেকে ২ লাখ টাকার কিস্তি তুলে নিয়েছে। সে আমার নামে তোলা ঐ কিস্তি নিয়মিত দেওয়ার কথা কিন্তু সে দুইটা কিস্তি দেওয়ার পর উধাও হয়েছে আমি এখন তাকে কিস্তির টাকা তুলে দিয়ে বেকায়দায় পরেছি। আমার পাওনা টাকা ফেরত পেতে তার বিরুদ্ধে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছি। 

ভুক্তভোগী সাথী আরা বলেন, কয়েক মাস পূর্বে সোহাগ মিলন নিশান আমার কাছে টাকা ধার নিতে আসে। আমার কাছে টাকা নেই একথা সাফ তাকে আমি জানিয়ে দেই। পরে সে আবার আমার কাছে  এসে বলে আমি একটা সমস্যা পরেছি কিছু টাকা এনজিও থেকে ঋন তুলে দেন এবং বলেন আমার নামে শুধু ঋন হবে টাকা সে নিবে, ঋনের কিস্তি সে নিয়মিত দিবে। 

আমি তার প্রলোভনে পরে তাকে বেশ কয়েকটা এনজিও থেকে আমার নামে ঋন নিয়ে তাকে ৮ লাখ টাকা তুলে দেই। সে বলেন কিস্তি সে চালাবে। এ বলে আমার কাছ থেকে টাকা নিয়েছে। টাকা নেওয়ার পর দুইটা কিস্তি সে দিয়েছে। তার পর সে বাড়িতে তালা লাগিয়ে স্বপরিবারে পালিয়ে গেছে। এখন এনজিও কর্মীরা আমার বাড়িতে এসে কিস্তির টাকার দাবি করছে, আমি দুটি কিস্তি ও অনেক কষ্ট করে দিয়েছি। আমার সাথে এমন প্রতারণা করা তার উচিত হয়নি। প্রশাসনের কাছে আকুল আবেদন এই প্রতারকের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিয়ে ঋনের বেড়াজাল  থেকে আমাকে উদ্ধার করার আহ্বান জানাই। উত্তর বলরামপুর গ্রামের দুলু সোনার বলেন,আমার নামে ৩ লক্ষ টাকা এনজিও থেকে তুলে নিয়েছে। তার পরিবারের সবাই জানে। সে এনজিও কিস্তি দেওয়ার কথা কিন্তু কিস্তি না দিয়ে হঠাৎ বাড়ি ছেড়ে উধাও হয়েছে। এখন কি করব কিছুই বুঝতে পারছি না। আত্মহত্যা ছাড়া আমার কোনো পথ নেই। এখন আমি আপনাদের মাধ্যমে  ওসি সাহেবের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। আমার পাওনা টাকা আমাকে ঐ প্রতারকের কাছ থেকে উদ্ধার করে দেওয়ার জন্য। 

স্থানীয়রা জানান, উত্তর বলরামপুর গ্রামের সামাদের ছেলে সোহাগ মিলন নিশান এলাকার বেশ কিছু মানুষকে প্রলোভন দেখিয়ে তাদের নামে  বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋণ তুলে নিয়ে সেই টাকা সুমোদয় সে নিয়েছে। ভুক্তভোগী ব্যাক্তিদের নামে তোলা এনজিও ঋনের টাকার কিস্তি সোহাগ মিলন নিয়মিত পরিশোধ করবেন বলে অঙ্গীকার করেন। কথামত দু-একটা কিস্তি সে দিয়েছে। বেশ কিছুদিন পূর্বে হঠাৎ সে বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র পালিয়ে গেছে। 

এ বিষয়ে জানতে বিবাদী সোহাগ মিলনের সাথে মুটোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। 

এ বিষয়ে বদলগাছী থানার ওসি মাহবুবুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় একটি অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত সাপেক্ষ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কোন মন্তব্য নেই