বগুড়ায় বিআরটিএ'র কর্মচারীর অঢেল সম্পদ, দুদকসহ সরকারী বিভিন্ন মহলে অভিযোগের পাহাড় - Chief TV - চিফ টিভি
![]() |
ছবি-প্রতিনিধি |
বগুড়ায় বাংলাদেশ রোড ট্রান্সফার অথরিটি (বিআরটিএ) তে অস্থায়ী ভিত্তিতে চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী হয়ে কয়েক বছরে হয়েছেন কোটি টাকার মালিক। সম্প্রতি এমনই এক অভিযোগ উঠেছে বগুড়া গাবতলী উপজেলাধীন সুখানপুকুর ইউনিয়নের আমতলী পাড়ার মাহবুব হোসেনের ছেলে আব্দুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে। বাড়ি গাড়িসহ কয়েক কোটি টাকার মালিক এই রাজ্জাক। তার আয়ের উৎস এবং এত সম্পত্তির মালিক হলেন কিভাবে এইটার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য দুদকের কাছে অভিযোগ।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, তিনি দীর্ঘদিন থেকেই বাংলাদেশ রোড ট্রান্সফার অথরিটি (বিআরটিএ) তে অস্থায়ী ভিত্তিতে চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী হিসেবে কর্মরত আছে। চাকরির বেশ কয়েক বছর আগেও আব্দুর রাজ্জাকের বাবা দিনমজুর হিসেবে অন্যের জমিতে কাজ করতেন। তার বড় ভাই সুখানপুকুর ইউনিয়ন পরিষদের একজন ইউপি সদস্য। তিনি গত কয়েক বছর আগেও ফেরি করে হাটে বাজারে শসা খিরা বিক্রি করতেন। তাদের বাড়ি ভিটার জায়গা ছিল মাত্র সাড়ে তিন শতক। আব্দুর রাজ্জাকের বড় বোন মর্জিনা বিআরটি এর একজন কর্মকর্তার বাসা বাড়িতে কাজ করতেন। সেই সুবাদে কর্মকর্তার হাতে পায়ে ধরে বিআরটিএতে অস্থায়ী ভিত্তিতে নিয়োগ পান আব্দুর রাজ্জাক।
তারপর থেকেই সকাল সন্ধ্যা ভাগ্যের চাকা ঘুরতে থাকে আব্দুর রাজ্জাকের। ফাইল প্রসেসিং, লাইসেন্সের নামে চাঁদাবাজি, ঘুষ বাণিজ্য, গ্রাম থেকে আসা সহজ সরল অসহায় মানুষকে জিম্মি করে তাদেরকে দিনের পর দিন হয়রানি একপর্যায়ে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়ে ভাগ্য বদল করেছে আব্দুর রাজ্জাক বলে জানান এলাকাবাসী।
অভিযোগ সূত্রে আরো জানা যায়,আব্দুর রাজ্জাক তার গ্রামের বাড়ি সুখানপুকুর এলাকার আমতলী পাড়াতে ৪০ লক্ষ্যাধিক টাকার বিলাসবহুল বাড়ি নির্মাণ করেছেন এবং পাশেই গড়ে তুলেছেন একটি গরুর খামার যার আনুমানিক মূল্য ১০ থেকে ১২ লক্ষ টাকা। এছাড়াও ধানি ফসলী জমি কিনেছেন ৪০ থেকে ৫০ লক্ষ টাকার।
বিলাসিতার জন্য তার রয়েছে দুইটি মোটরসাইকেল যার আনুমানিক মূল্য ৮ লাখ টাকা। আলাদির চেরাগ পাওয়া আব্দুর রাজ্জাক এখানেই থেমে যায়নি তার নামে বেনামে করেছে কোটি কোটি টাকার সম্পদ।
গোপন সূত্রে জানা যায়, সে শহরের বউবাজার এবং আভিজাত জলেশ্বরীতলা এলাকার বগুড়া জজ আদালতের পাশে একটি করে ফ্ল্যাট কিনেছেন। চকডংড় এলাকায় অবৈধ বালুমহল চালু করে বড় ভাই ইউপি সদস্য উজ্জ্বল হোসেন এবং আব্দুর রাজ্জাক কোটি কোটি টাকার বালু উত্তোলন করে রাষ্ট্রীয় ক্ষতি সাধন করছে, পাশাপাশি এলাকায় বিচার, সালিশ বাণিজ্য, চাঁদাবাজি, জমি দখল, ভূমিদস্যুতা সহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িত এই আব্দুর রাজ্জাক ও তার বড় ভাই ইউপি সদস্য উজ্জ্বল হোসেন বলে জানা যায়। বেশ কিছুদিন আগেও হত্যার উদ্দেশ্যে আঘাত জনিত একটি মামলার প্রধান আসামী হন এই আব্দুর রাজ্জাক। গত কয়েকদিন আগেও পর্নোগ্রাফি আইনে মামলায় আসামী হয়ে বর্তমানে পালাতক রয়েছেন আব্দুর রাজ্জাকের আপন বড় ভাই ইউপি সদস্য উজ্জ্বল হোসেন।
এখানেই গল্পের শেষ নয় গত ১৮ এপ্রিল গাবতলী মডেল থানা পুলিশের অভিযানে রমজান আলীর ছেলে বুলবুল আহমেদ (৪৭) কে দশ লিটার চোলাই মদসহ গ্রেফতার করা হয়। আটককৃত মাদক কারবারি বুলবুল দীর্ঘদিন থেকেই আব্দুর রাজ্জাকের বাড়িতে কাজ করে আসছে। স্থানীয় লোকদের অভিযোগ আব্দুর রাজ্জাকের চলাফেরা সন্দেহজনক তাই আব্দুর রাজ্জাক নিজেই মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত তবে বুলবুলকে দিয়েই তিনি মাদক সরবরাহ করে থাকেন বলে স্থানীয়দের মনে সন্দেহ বাসা বেঁধেছে।
প্রশ্ন থেকেই যায়, যদি তাই না হয় তাহলে বগুড়া বিআরটিএ তে চতুর্থ শ্রেণীর একজন কর্মচারী অস্থায়ী ভিত্তিতে সর্বোচ্চ ১৫ হাজার টাকা সম্মানী পাবার কথা কিন্তু সেই টাকা দিয়ে পরিবারের খরচ, ফসলের জমি চাষাবাদ, বাচ্চার পড়াশোনা, বাজার খরচ অন্যান্য খরচ সহ মাস শেষে তার কোন ভাবে বর্তমান বাজার হিসেবে জীবন যাপন করা চলে, তবে সর্বসাকুল্যে প্রায় দেড় কোটি টাকার সম্পদ কিভাবে অর্জন করা সম্ভব।
আব্দুর রাজ্জাকের এই আয়ের উৎস এবং সম্পত্তির অবৈধ লে দুদকে সুষ্ঠু তদন্তের জন্য অভিযোগ দিয়েছেন স্থানীয় এলাকাবাসী।
উল্লেখ্যঃ চিফ টিভিতে একটি ভিডিওতে আপনারা দেখেছিলেন, এই রাজ্জাকের ভাইয়ের গোপন ক্যামেরায় রেকর্ড করা কিছু কথা।
কোন মন্তব্য নেই