গাজীপুরে লোডশেডিং জনজীবন বিপর্যস্ত,কলকারখানায় উৎপাদন ব্যাহত - Chief TV - চিফ টিভি
![]() |
ছবি-প্রতিনিধি |
গাজীপুরে ঘনঘন লোডশেডিংয়ে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। দিন-রাতে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ১০ থেকে ১২ ঘণ্টাই লোডশেডিং হচ্ছে। কলকারখানার উৎপাদন স্বাভাবিক রাখার জন্য শিল্পকারখানা অধ্যুষিত এলাকায় কম লোডশেডিং দেওয়ার কথা থাকলেও তা মানা হচ্ছে না বলে অভিযোগ শিল্পোদ্যোক্তাদের। এছাড়া অতিরিক্তি লোডশেডিংয়ের কারণে আসন্ন এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা পড়েছে বিপাকে। তাদের পরীক্ষার প্রস্তুতি মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে। নিয়মিত লোডশেডিং ছাড়াও বিদ্যুৎ লাইন সংস্কারসহ নানা অজুহাতে কর্তৃপক্ষ প্রায়ই কোনো কোনো এলাকায় দীর্ঘ সময় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখছে।
রবিবার সকাল ৬টা থেকে বিকাল ৬টা পর্যন্ত গাজীপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১-এর কড্ডা ফিডারভুক্ত চান্দনা চৌরাস্তা, তারগাছ ,বড়বাড়ী ,নাওজোরসহ আশপাশের এলাকায় দিনভর বিদ্যুৎ ছিল না। এতে ঐ এলাকার লোকজন দুর্ভোগের শিকার হন। কলকারখানার উৎপাদনও ব্যাহত হয়। বিদ্যুতের অভাবে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানও কার্যত বন্ধ ছিল। চান্দনা চৌরাস্তায় বৈদ্যুতিক খুঁটি স্থানান্তর করায় শনিবার সারা দিন বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা হয় বলে গাজীপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ডিজিএম জাহিদুল ইসলাম জানিয়েছেন।
লোডশেডিংয়ের মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ায় কলকারখানায় আগের চেয়ে উত্পাদন হ্রাস পেয়েছে বলেও শিল্পমালিকরা জানিয়েছেন। এলাকাভিত্তিক নির্ধারিত শিডিউল অনুযায়ী এক ঘণ্টার জন্য লোডশেডিং দেওয়ার কথা থাকলেও সে নিয়ম মানা হচ্ছে না। চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ কম থাকায় বিদ্যুৎ বিতরণে এ ব্যত্যয় ঘটছে বলে স্থানীয় পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি কর্তৃপক্ষের দাবি।
গাজীপুর পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি-১ সূত্রে জানা গেছে, এ সমিতির আওতায় গ্রাহকদের দৈনিক বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে ৪৬২ মেগাওয়াট। জাতীয় গ্রিড থেকে পাওয়া যাচ্ছে সর্বোচ্চ ২৮০ থেকে ৩০০ মেগাওয়াট। তাই প্রতিদিন প্রায় ১৬২ মেগাওয়াট বিদ্যুত্ঘাটতি মোকাবিলায় লোডশেডিং দিতে হচ্ছে দফায় দফায়। এরপরও লোড ডেসপাস সেন্টার (এলডিসি) কর্তৃপক্ষের নানা নির্দেশনার কারণে আরও অতিরিক্ত লোডশেডিং দিতে হচ্ছে। এলডিসি বরাদ্দ কমিয়ে দিলে তখন সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে সমিতির কিছুই করার থাকে না বলে তাদের দাবি।
গাজীপুর পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি-১-এর সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার আবুল বাশার আজাদ জানান, ১৭৫টি ফিডারের মাধ্যমে গ্রাহকদের কাছে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। এর মধ্যে ১১০টি ফিডারের মাধ্যমে ছোট-বড় কয়েক হাজার শিল্পকারখানায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। বাকি ৬০টি ফিডারের মাধ্যমে আবাসিক গ্রাহকদের বিদ্যুৎসুবিধা দেওয়া হয়। শিল্পকারখানায় লোডশেডিং না করার নির্দেশনা থাকলেও বর্তমানে সরবরাহ কম থাকায় উভয় ফিডারে বাধ্য হয়ে লোডশেডিং করতে হচ্ছে।
তিনি জানান, জাতীয় গ্রিড থেকে সরাসরি লোড ম্যানেজমেন্ট করা হয়। উচ্চ পর্যায়ের নির্দেশে নতুন নিয়মে তাৎক্ষণিক লোডশেডিং করতে হচ্ছে। এজন্য গ্রাহকদের আগে জানানো সম্ভব হয় না।
কারখানার কয়েক জন মালিক জানান, বিদ্যুৎ ও গ্যাসসংকটের কারণে মালিক-শ্রমিকদের মধ্যে দুশ্চিন্তা ক্রমশ প্রকট হচ্ছে। জেনারেটরের জ্বালানি সরবরাহ করতেও তারা হিমশিম খাচ্ছেন। এভাবে চলতে থাকলে কারখানামালিকদের ব্যবসা গুটিয়ে ফেলতে হবে বলে তাদের আশঙ্কা। এতে কর্মহীন হওয়ার আশঙ্কায় শ্রমিকদের মধ্যেও উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে।
কোন মন্তব্য নেই