শিরোনাম

টাইব্রেকারে জিতে সেমিফাইনালে আর্জেন্টিনা - Chief TV - চিফ টিভি

টাইব্রেকারে জিতে সেমিফাইনালে আর্জেন্টিনা
ছবি-প্রতিনিধি
খেলাধুলা ডেস্কঃ

ইকুয়েডর গত দুই দশকে কোপা আমেরিকায় কোনো লাতিন দলকেই হারাতে পারেনি। তারাই এবার কোপা আমেরিকার কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের প্রায় ছিটকে ফেলেছিল! কিন্তু লিওনেল স্কালোনির দল হোঁচট খেলেও শেষ পর্যন্ত ঠিকই ঘুরে দাঁড়িয়েছে। আর সেটা হয়েছে এমিলিয়ানো মার্টিনেজের বীরত্বে। টাইব্রেকারে লিওনেল মেসির শট মিস হওয়ার পর যে চাপ ছিল, সেটি একাই সামলেছেন এমিলিয়ানো মার্টিনেজ। গতকাল কোপা আমেরিকার কোয়ার্টার ফাইনালে ইকুয়েডরকে টাইব্রেকারে ৪-২ ব্যবধানে হারায় আর্জেন্টিনা। আর্জেন্টিনার সমর্থকরা যখন জয়ের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন, তখনই যেন এলো ধাক্কা। যোগ করা সময়ের প্রথম মিনিটে জন ইয়াবোয়াহর ক্রসে মাথা ছুঁইয়ে ইকুয়েডরকে সমতায় ফেরান কেভিন রদ্রিগেজ। ১-১ গোলের সমতায় শেষ হয় নির্ধারিত ৯০ মিনিটের খেলা। কোপা আমেরিকার নিয়ম মেনে ম্যাচ চলে যায় সরাসরি পেনাল্টি শুটআউটে। সেখানে প্রথম শটে গোল করতে ব্যর্থ হন লিওনেল মেসি।

আর্জেন্টাইন অধিনায়কের ‘পানেনকা’ শট গিয়ে লাগে ক্রস বারে। মেসি ব্যর্থ হলেও আবারও আর্জেন্টিনার ত্রাণকর্তা হয়ে দাঁড়িয়ে যান এমিলিয়ানো মার্টিনেজ। দুই পেনাল্টি ঠেকিয়ে আরও একবার নায়ক বনে যান বিশ্বকাপজয়ী এই গোলরক্ষক । 

খেলা শেষে আর্জেন্টিনার জয়ের নায়ক মার্টিনেজ বলেন, টুর্নামেন্টের এ পর্যায়েই বাড়ি যেতে চাননি তিনি। এই দল আরও সামনে এগিয়ে যাওয়ার মতো বলেও মনে করেন অ্যাস্টন ভিলা গোলরক্ষক। ম্যাচ শেষে মিক্সড জোনে বলেন, ‘ওদের (সতীর্থদের) বলেছি, আমি বাড়ি যেতে প্রস্তুত নই। আমার সমর্থকদের অনুভব করি। আমার পরিবারও কাছেই আছে। এগুলো জীবনের বিশেষ মুহূর্ত। এই দল আরও সামনে এগিয়ে যাওয়ার মতো। সব মিলিয়েই ব্যাপারটি রোমাঞ্চকর।’ আর্জেন্টিনা জাতীয় দলের হয়ে এখন পর্যন্ত চারবার টাইব্রেকার শুটআউটে দাঁড়িয়েছেন মার্টিনেজ। জিতেছেন চারটিতেই। এর মধ্যে মোট ১৮টি শট হয়েছে তার বিরুদ্ধে, ৯টিতেই প্রতিপক্ষ গোল করতে পারেনি। একটি ছিল পোস্টের বাইরে, বাকি আটটি মার্টিনেজ রুখে দিয়েছেন। ২০২১ সালের কোপা আমেরিকায় কলম্বিয়ার বিপক্ষে ঠেকিয়েছিলেন ৩ পেনাল্টি। এরপর বিশ্বকাপে নেদারল্যান্ডস আর ফ্রান্সের বিপক্ষে জয় তো ধরা দিল এমি মার্টিনেজের বিশ্বস্ত হাতে।

৩১ বছর বয়সী এই গোলরক্ষক নিজের মূল উদ্দেশ্য পুনরাবৃত্তি করে বলেন, ‘আমি এমন কিছুর জন্যই কাজ করি। প্রতিদিন অনুশীলনে আমি ৫০০-এর মতো শটের মুখোমুখি হই। চেষ্টা করি সব সময়ই ভালো অবস্থানে থাকতে। আমার দেশের এটা প্রাপ্য। মানুষ টাকা খরচ করে আমাদের খেলা দেখতে চায়। আমি তো মানুষের কণ্ঠের আবেগ মিস করি, তাদের উল্লাস মিস করি। এসব নিয়ে আমি গর্বিত। একজন গোলরক্ষক হিসেবে ও ব্যক্তি হিসেবে আমি আরও উন্নতি করতে চাই।’ ২০২১ সালের কোপা আমেরিকা থেকেই পেনাল্টিতে আর্জেন্টিনার ভরসা মার্টিনেজ।

সেবার শিরোপা জয়ের পথে সেমিফাইনালে কলম্বিয়ার বিপক্ষে ঠেকিয়েছিলেন ৩টি পেনাল্টি। গতকাল আর্জেন্টিনার হয়ে টাইব্রেকারে প্রথম শটই মিস করেন লিওনেল মেসি। ইকুয়েডরের শুরুর দুই শট নেন আনহেল মেনা এবং অ্যালান মিন্দা। দুই শটই ঠেকিয়ে দেন মার্টিনেজ। আর্জেন্টিনার হয়ে গোল করেন হুলিয়ান আলভারেজ, ম্যাকঅ্যালিস্টার, গঞ্জালো মন্তিয়াল ও নিকোলাস ওটামেন্ডি। পুরো ম্যাচেই কাউন্টার অ্যাট্যাক থেকে দারুণ কিছু গোলের সুযোগ তৈরি করেছিল ইকুয়েডর। প্রথমার্ধে একাধিকবার দল বিপদের মাঝে পড়লেও ৩৫তম মিনিটে লিসান্দ্রো মার্টিনেজের গোলে স্বস্তির  লিড পায় আর্জেন্টিনা। পুরো ম্যাচেই ইকুয়েডরের লং বলের সামনে বিপাকে পড়েছিল আর্জেন্টিনা। শেষ পর্যন্ত বিপদটাও হলো সেখানেই।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই ম্যাচের দৃশ্যপটে ছিল ইকুয়েডর। এসময়ে দৃশ্যত এগিয়ে ছিল ইকুয়েডরই। আর্জেন্টিনা যেখানে পুরো ৪৫ মিনিটে একবারই কেবল গোলে শট নিয়েছে, সেখানে বারবার আলবিসেলেস্তেদের ডিবক্সে হানা দিয়েছিল এনার ভ্যালেন্সিয়া-ময়জেস কেইসেডোরা। ম্যাচের ৬২ মিনিটে সমতায় ফিরতে পারতো তারা। ডি বক্সের ভিতরে রদ্রিগো ডি পল হ্যান্ডবল করলে পেনাল্টি পায় ইকুয়েডর। কিন্তু এনার ভ্যালেন্সিয়ার পেনাল্টি ফিরে আসে পোস্টে লেগে। ম্যাচের ৬৮ মিনিটে প্রথম গোলমুখে শট নেন লিওনেল মেসি, তার ডান পায়ের শট সোজা গোলরক্ষক বরাবর গেলে সেটি তিনি ভালোভাবেই রুখে দেন। ম্যাচে যখন আর্জেন্টিনা জয়ের সুবাস পাচ্ছে তখনই ম্যাচের যোগ করা সময়ের দ্বিতীয় মিনিটে ইকুয়েডরের কেভিন রড্রিগেজ গোল করে ইকুয়েডরকে সমতায় ফেরান। কোপায় কোনো অতিরিক্ত সময়ের নিয়ম না থাকায় ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে।


 

   

কোন মন্তব্য নেই