শিরোনাম

বগুড়ায় দিনে নয় রাতেও নেয়া হয় চাঁদা, ১০ টাকা লেখা থাকলেও নেয়া হয় ৩০ টাকা - Chief TV - চিফ টিভি

বগুড়ায় দিনে নয় রাতেও নেয়া হয় চাঁদা, ১০ টাকা লেখা থাকলেও নেয়া হয় ৩০ টাকা - Chief TV - চিফ টিভি
ছবিঃ প্রতিনিধি

শুভজিৎ সরকার, চিফ টিভিঃ

বগুড়ায় রাত হোক বা দিন,পরিবহন চাঁদাবাজদের কাছে যেন এই শহর চাঁদার স্বর্গরাজ্য। বিভিন্ন নেতা বা শ্রমিক ইউনিয়নের নামে চলে এসব চাঁদাবাজি। পরিবহন নেতাদের বা তথাকথিত বিভিন্ন ইউনিয়নে চাঁদা না দিলে চলতে পারে না কোন গাড়ি।

চিফ টিভির অনুসন্ধানে মিলেছে বগুড়ায় বিভিন্ন নামে পরিবহন সমিতি নাম। এর মধ্যে বাস-মিনিবাস মালিক সমিতি, জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়ন, জেলা বাস মালিক সমিতি, জেলা ট্রাক মালিক সমিতি, জেলা সিএনজি অটোরিকশা মালিক সমিতি, গোহাইল রোড সিএনজি মালিক সমিতি উল্লেখযোগ্য। এসব সমিতি চাঁদাবাজি করার জন্যই যেনো গঠন করা হয়েছে বলে ক্ষোপ জানিয়েছেন গাড়ি চালক ও মালিকরা। দিন হোক বা রাত প্রকাশ্যে চলে এসব চাঁদাবাজি। নীরব যেনো প্রশাসন, চাঁদা দিতে বন্দী গাড়ির মালিক ও চালক। 

অনুসন্ধান সময় দেখা যায়, বগুড়ায় মহাসড়ক থেকে শুরু করে শহরের বিভিন্ন সিএনজি স্ট্যান্ড বা বাস স্ট্যান্ডগুলোতে মোটর শ্রমিক ইউনিয়ন, নেতাকর্মী এবং প্রশাসনের নামে চলছে চাঁদাবাজি। সিএনজি, অটোরিকশার চালককে চাঁদা হিসেবে প্রতিদিন গড়ে ৬০ থেকে ১০০ টাকা করে দিতে হয়।

অনুসন্ধানে চিফ টিভির ক্যামেরায় ধরা পড়ে আলম হোসেন নামের এক চাঁদাবাজির চাঁদা তোলার দৃশ্য। দেখা যায় বগুড়া শহরের প্রাণকেন্দ্র সাতমাথায় রাত ১টায় বিভিন্ন  সিএনজি চালকের থেকে বগুড়া জেলা মটর শ্রমিক ইউনিয়নের ১০ টাকা ইস্যুকৃত স্লিপে ৩০ টাকা করে তোলার দৃশ্য। যদিও ইউনিয়ন কর্তৃক নিয়োজিত চেইন মাস্টার দ্বারা এ টাকা তোলার নিয়ম থাকলেও সে একজন চালক হয়েই রশিদের নির্ধারিত টাকার চাইতে বেশি তোলছেন।

এ বিষয়ে চাঁদা উত্তোলনকারী আলম নামের ওই ব্যক্তির সাথে কথা বলে জানা যায়, ইস্যুকৃত দশ টাকার স্লিপে ৩০ টাকা তুলার অনুমতি দিয়েছে বগুড়া মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি সৈয়দ কবির আহমেদ মিঠু। তিনি আরো বলেন, ১০ টাকার স্লিপে ৩০ টাকা তুলে, ১০ টাকা বগুড়া মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি সৈয়দ কবির আহমেদ মিঠুকে দিতে হয়, ১০ টাকা যিনি তুলেন তার এবং বাকি ১০ টাকা প্রশাসনকে দেন। 

এ বিষয়ে সিএনজি চালকরা জানায়, বগুড়া শহর বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন সংগঠেন নামে চাঁদা দিতে হয়। আর চাঁদা না দিলে তারা গাড়ি আটকে দেয়। এসব চাঁদা ওঠে জেলা মটর শ্রমিক ইউনিয়ন,প্রশাসন, নেতাদের নামে। চালককে সমিতির কার্ড নিতে মোটর শ্রমিক ইউনিয়নকে ১০ হাজার টাকা চাঁদা দিতে হয়। এছাড়াও ভর্তি হওয়ার পর থেকে প্রতিদিন বিভিন্ন সমিতিকেও চেইন চাঁদা দিতে হয়। তাদের দাবি,সমিতি কর্তৃক নির্ধারিত টাকার বেশি কেউ যেনো টাকা না তোলতে পারে। সেইদিকে শ্রমিক ইউনিয়নের নেতাদের নজর রাখা দরকার। ইউনিয়ন,বিভিন্ন নেতা,প্রশাসনের নামে এসব চাঁদাবাজি দ্রুতই যেন বন্ধ হয়। 

এ বিষয়ে বগুড়া জেলা শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি সৈয়দ কবির আহমেদ বলেন, ইস্যুকৃত স্লিপ দিয়ে ১০ টাকার বেশি  চাঁদা তোলার ব্যাপারে ফেডারেশন কর্তৃক কোন অনুমতি নেই। সংগঠনের নামে চেইন বাবদ যে টাকা তোলা হয়, তা সংগঠনের উন্নয়ন ও শ্রমিকদের কল্যাণে ব্যয় করা হয়।

তিনি আরো বলেন,বগুড়া শহরে যে কোন প্রান্ত থেকে গাড়ি চললে তার ফাউন্ডেশনকে ১০টাকা করে দিতে হবে। কিন্তু ১০ টাকার রশিদ দিয়ে তার নামে ৩০ টাকা তোলার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, তার ফাউন্ডেশনে নামে  শুধু ১০ টাকা জমা হয়। বাকি ২০ টাকা কে বা কারা নেয় সেই বিষয়টি তার জানা নেই।

এ বিষয়ে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ট্রাফিক সুমন রঞ্জন সরকার বলেন, প্রশাসন বা কোন ব্যক্তির গাড়ি থেকে টাকা তোলার অনুমতি নেই। গাড়ি থেকে টাকা তোলা এটি একটি চাঁদাবাজি। তিনি আরো বলেন, সড়ক পরিবহন আইন অনুযায়ী, শুধু সাত মাথায় নয় যেকোনো জায়গায় গাড়ি থেকে টাকা তোলা আইনগত অপরাধ। এ চাঁদাবাজির সাথে যারা জড়িত আছেন তাদের বিরুদ্ধে প্রমাণ সাপেক্ষে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কোন মন্তব্য নেই