শিরোনাম

হয় মাদক ছাড়, না হয় ঠাকুরগাঁও ছাড়: এসপি - Chief TV - চিফ টিভি

হয় মাদক ছাড়, না হয় ঠাকুরগাঁও ছাড়: এসপি
ছবি-প্রতিনিধি
মোহাম্মদ রায়হান, ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিঃ

গত বছরের ২৭ জুলাই ঠাকুরগাঁও পুলিশ সুপার হিসেবে যোগদান করেন উত্তম প্রসাদ পাঠক পিপিএম-সেবা। এর আগে তিনি ডিএমপির উপ-পুলিশ কমিশনার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ঠাকুরগাঁওয়ে যোগদানের প্রথম দিনেই মুখোমুখি হন গণমাধ্যমকর্মীদের। তখন জেলার প্রধান সমস্যাগুলো জানতে চাইলে সাংবাদিকরা এসপিকে জানান, জেলায় মাদকের বিস্তার ব্যাপক হারে বেড়েছে। এরপর এসপি মাদকের সঙ্গে জড়িতদের উদ্দেশ্যে বলেন- হয় মাদক ছাড়, না হয়  ঠাকুরগাঁও ছাড়।

ইতোমধ্যে ঠাকুরগাঁওয়ে দায়িত্ব পালনের এক ১১ পূর্ণ হয়েছে এসপি উত্তম প্রসাদ পাঠকের। এরই মধ্যে মাদকের বিরুদ্ধে স্বোচ্চার হয়ে উঠেছেন তিনি। তার যোগদানের পর জেলার ৭টি থানা ও গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) পুলিশ সক্রিয় হয়ে উঠেছেন মাদক কারবারিদের নিয়ন্ত্রণে। প্রায় প্রতিদিনই প্রতিটি থানাতে কোন না কোন মাদকে জড়িতরা ধরা পড়ছেন।

এই মধ্যে গত পাঁচ দিনে মাদকে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে ২১ জনকে। এ সময় তাদের কাছ থেকে ১০৩০ গ্রাম শুকনো গাঁজা, ২৪৯ পিচ ট্যাপেন্টাডোল ট্যাবলেট, ৯৩ পিচ ইয়াবা ও ১৪ বোতল ফেন্সিডিল জব্দ করা হয় এবং পুলিশ কর্তৃক ২২টি ওয়ারেন্ট নিষ্পত্তি করা হয়। মাদকদ্রব্য ছাড়াও অন্যান্য অপরাধ দমনেও ব্যাপক তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি।

এছাড়া পুলিশের বিভিন্ন অভিযান, মাদক উদ্ধার, অপরাধীদের গ্রেফতারসহ বিভিন্ন তথ্য জেলা পুলিশের নিজস্ব ফেসবুক পেইজের মাধ্যমে নিয়মিত জানিয়ে দিচ্ছেন জেলার মানুষকে। এসব কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে এরই মধ্যে এসপি উত্তম প্রসাদ পাঠক প্রশংসাও কুড়িয়েছেন সারাধণ মানুষের কাছ থেকে।

রোববার (৯ মে) সকালে ঠাকুরগাঁও পুলিশ সুপার কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে পুলিশ সুপার উত্তম প্রসাদ পাঠক এর দিক-নির্দেশনায় নিয়মিত মাদকবিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবে সোমবার (৩ জুন) রাত থেকে শনিবার (৮ জুন) রাত পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে মাদকসহ তাদের গ্রেফতার করা হয়।

শনিবার (৮ জুন) জেলা সদরের রায়পুর ইউনিয়নের মোলানী এলাকা থেকে ১০৫ গ্রাম শুকনো গাঁজা সহ রাকিব (২৩), আউলিয়াপুর কচুবাড়ী বোর্ড অফিস এলাকা থেকে ৪ পিচ ট্যাপেন্টাডোল ট্যাবলেট সহ আল আমিন হক (৩৫), জেলার পীরগঞ্জ উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নের সাটিয়া এলাকা থেকে ১৫ পিচ ইয়াবা ৭০ পিচ ট্যাপেন্টাডোল ট্যাবলেটসহ আলী হোসেন (৪৩) জাবরহাট ইউনিয়নের রনশিয়া গ্রাম থেকে ৯ বোতল ফেন্সিডিল ও ১টি মোটর সাইকেল উদ্ধার , রাণীশংকৈল পৌরসভার মধ্য ভান্ডারা গ্রাম থেকে ৮ পিচ ইয়াবাসহ মোঃ সজিব (২৮) ও হরিপুর উপজেলার গেদুড়া ইউনিয়নের নোনাডাঙ্গী গ্রাম থেকে ১৩৫ গ্রাম শুকনো গাঁজাসহ  জামাল (৪০) কে গ্রেফতার করেছে জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) পুলিশের একটি দল।

শুক্রবার (৭ জুন) রাতে জেলার বিভিন্ন উপজেলায় মাদক বিরোধী অভিযান চালিয়ে ৩৬০ গ্রাম শুকনো গাঁজা, ৬০পিচ ট্যাপেন্টাডোল ট্যাবলেট ও ৫ বোতল ফেন্সিডিলসহ ৭ জন এবং পুলিশ কর্তৃক ১২টি ওয়ারেন্ট নিষ্পত্তি, বৃহস্পতিবার (৬ জুন) রাতে জেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৫লিটার চোলাই মদ, ১১ পিচ ইয়াবা ও ৩১০ গ্রাম শুকনো গাঁজাসহ ৪ জন, মঙ্গলবার (৪ জুন) রাতে ঠাকুরগাঁও সদর ও বালিয়াডাঙ্গীর  বিভিন্ন এলাকায় ১০৪ পিচ ট্যাপেন্টাডোল ট্যাবলেট ও ৬০ পিচ ইয়াবাসহ ২ জন এবং পুলিশ কর্তৃক ১০ টি ওয়ারেন্ট নিষ্পত্তি ও সোমবার (৩ জুন) ঠাকুরগাঁও সদর, বালিয়াডাঙ্গী ও রানীশংকৈল উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় মাদক বিরোধী অভিযানে ১২০ গ্রাম শুকনো গাঁজা ও ৩৩ পিচ ইয়াবাসহ ৩ জন মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার  করে পুলিশ। গ্রেফতারদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে ২০টি মামলা রুজু হয়েছে।

এ ব্যাপারে পুলিশ সুপার বলেন, মাদকের সঙ্গে জড়িতদের ঠাঁই ঠাকুরগাঁওয়ে হতে পারে না। আমাদের প্রতিটি বিভাগকে মাদকের বিরুদ্ধে স্বোচ্চার হতে কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে জেলাজুড়ে মাদক-বিরোধী অভিযান জোরদার করা হয়েছে। আমরা মানুষের শান্তি ও সেবার জন্য কাজ করি।

তিনি আরও বলেন, জেলাবাসীর জন্য আমাদের প্রতিদিনের নিরন্তর প্রচেষ্টা ও অর্জনগুলো প্রতিদিনই তাদের কাছে প্রকাশ করছি। এছাড়া কোন পুলিশ সদস্য যদি অন্যায়ভাবে কাউকে হয়রানি করে বা মাদকসহ অনৈতিক কাজে জড়িত থাকে, তাহলে তাকেও ছাড় দেওয়া হবে না। বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।

কোন মন্তব্য নেই