বগুড়ায় আশিক হত্যা মামলায় ৩ জনের ফাঁসি, স্ত্রীর যাবজ্জীবন- Chief TV - চিফ টিভি
![]() |
ছবি-প্রতিনিধি |
বগুড়ায় বিয়ের পর পরকীয়ার কারণে ইজিবাইক চালক আশিক মিয়া হত্যা মামলার রায়ে পরকীয়া প্রেমিক শিবলু ফকির (২৪) সহ ৩ জনের মৃত্যুদন্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি প্রত্যেকের ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়সহ ৬ মাসের সশ্রম কারাদন্ডাদেশ দিয়েছে আদালত। এ মামলায় নিহত আশিক মিয়ার স্ত্রী মিনাকে যাবজ্জীবন সশ্রম করাদন্ডাদেশ দেয়া হয়েছে।
নিহত আশিক মিয়া বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার হাটফুলবাড়ী মধ্যপাড়ার মৃত সালাউদ্দিনের ছেলে ছিলেন। গত মঙ্গলবার (০৪জুন) বগুড়ার ১ম অতিরিক্ত দায়রা জজ হাবিবা মন্ডল এই মামলার রায় প্রদান করেন।
এছাড়াও নিহত আশিক মিয়ার লাশ গুমের দায়ে ওই ৪ আসামীর প্রত্যেককে ২ বছর করে সশ্রম কারাদন্ড ও ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরো ৬ মাসের কারাদন্ডাদেশ দেন তিনি।
মৃত্যু দন্ডাদেশ প্রাপ্ত আসামীরা হলো, বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার কুটিবাড়ীর ছফু খাঁর ছেলে শিবলু ওরফে ফকির (২৪), রামনগর তরফদার বাড়ীর মৃত সিরাজুল ইসলাম তরফদারের ছেলে সিয়াম (২৩) ও আমতলী দক্ষিণপাড়ার তরিকুল মন্ডলের ছেলে নাইম (২৫) সকলে একই উপজেলা বাসিন্দা। এই মামলার যাবজ্জীবন কারাদন্ডাদশ প্রাপ্ত আসামী হলেন, সারিয়াকান্দি উপজেলার হাটফুলবাড়ী মধ্যপাড়ার বাসিন্দা নিহত আশিকের স্ত্রী মিনা বেগম (২৫)।
মামলা সূত্রে জানা যায়, বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার হাটফুলবাড়ী মধ্যপাড়ার মৃত সালাউদ্দিনের ছেলে আশিক মিয়ার সাথে ৪ বছর পূর্বে বিয়ে হয় মিনা বেগমের। বিয়ের পর তাদের একটি ছেলে সন্তান জন্ম নেয়। এদিকে মিনা বেগমের সাথে তার ফুফাতো ভাই শিবলু ওরফে ফকিরের পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এ বিষয়টি জানাজানির পর তাদের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি ঘটে। এরপর এক পর্যায়ে গত ২০২০ সালের ২ অক্টোবর সন্ধ্যা ৬ টার দিকে আসামীরা আশিক মিয়ার ইজিবাইক ভাড়া নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ঘোড়াঘুড়ি করে এবং এক পর্যায়ে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা শেষে মরদেহ এসিড দিয়ে পুড়ে মুখমন্ডল বিকৃত করার পর লাশ গুমের উদ্দেশ্যে বাঙ্গালী নদীর পানিতে ফেলে দেয়। পরে বাড়ির লোকজন বিভিন্ন স্থানে খোঁজ করে সন্ধান না পাওয়ায় মিনা বেগম সারিয়াকান্দি থানায় একটি জিডি করেন।
তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশ তাদের কার্যক্রম শুরু করে। অনেক খোঁজাখুঁজির পর তাকে না পেয়ে তাদের গোয়েন্দা তৎপরতা বাড়িয়ে দেন। এতে নিহত আশিকের স্ত্রী মিনার ওপর পুলিশের সন্দেহ হলে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করার এক পর্যায়ে সে হত্যাকান্ডের ঘটনা স্বীকার করে এবং আসামীদের নাম বলে দেয়। ওই ঘটনার ২ দিন পরে ৪ অক্টোবর উপজেলার ছাগধরা পূর্বপাড়ায় বাঙ্গালী নদীর পানি হতে আশিকের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
এ ব্যাপারে নিহত আশিক মিয়ার বড় ভাই আনিছ ইদ্দিন বাদি হয়ে ওই আসামীদেও বিরুদ্ধে সারিয়কান্দি থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে পলিশ ৪ আসামীকে গ্রেফতার করলে তারা সকলেই হত্যাকান্ডের ঘটনা স্বীকার করে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জবানবন্দী প্রদান করে।
কোন মন্তব্য নেই