বগুড়ায় পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে নারী কেলেংকারী ও ভয় দেখিয়ে রাজত্বের অভিযোগ - Chief TV - চিফ টিভি
![]() |
ছবি-প্রতিনিধি |
বগুড়ায় পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে নারী কেলেংকারীসহ সাধারণ মানুষকে হয়রানি করে টাকা নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য হলেন বগুড়া জেলার শিবগঞ্জ থানার কর্মরত সাব ইন্সপেক্টর ইব্রাহিম। তিনি সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুর থানার বাসিন্দা।
জানা যায়, এই পুলিশ সদস্যের রয়েছে একাধিক স্ত্রী। তবুও সে আসক্ত বিভিন্ন নারীতে। এমনি অভিযোগ তুলেছেন সেই অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য সাব ইন্সপেক্টর ইব্রাহিমের তৃতীয় স্ত্রী চুমকি বেগম। শুধু তার স্ত্রীর অভিযোগই শেষ নয়, এই পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে রয়েছে বিভিন্ন অভিযোগ। জানা যায়, এই পুলিশ সদস্য নিজের স্বার্থ উদ্ধারে সাধারণ মানুষদেরকে হাতে হ্যান্ডকাপ পড়িয়ে বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখিয়ে অর্থ আদায়সহ মাদক কারবারিদের সেল্টার দেয়ার অভিযোগ উঠেছে।
একটি ভিডিওতে দেখা যায়, সাব ইন্সপেক্টর ইব্রাহিমের ৩য় স্ত্রী চুমকী বেগম বলছেন, বগুড়া জেলার শিবগঞ্জ থানাধীন মাঝিহট্ট, কেলুঞ্জা গ্রামের ওমর আলীর মেয়ে, মোরশেদা বিবি নওগাঁর একটি আবাসিক হোটেলে রাত্রি যাপনসহ আরও বেশ কিছু আবাসিক হোটেলে ইব্রাহিম ও মোরশেদা এক সাথে এক রুমে রাত্রি যাপন করেছেন। এমন কি দীর্ঘদিন ধরেই এই পুলিশ সদস্য মোরশেদা বিবির বাড়িতে যাতায়াত করেন বলে জানান এলাকাবাসী। আরো জানা যায়, গত ৬ষ্ট উপজেলা নির্বাচনের সময় সাব ইন্সপেক্টর ইব্রাহিমের ডিউটি কর্মস্থল ছিলো মোরশেদার এলাকায়। সেই দিনও দুপুরের সময় তিনি মোরশেদা বিবির বাড়িতে যান এবং দুপুরের আহার করেন।
এই মোরশেদা বিবি বিভিন্ন সময় ইব্রাহিমের জন্য বিভিন্ন রকমের খাবার তৈরি করতেন এবং তা বিভিন্ন লোকের মাধ্যমে ইব্রাহিম এর কাছে পৌঁছাতেন। এছাড়াও ইব্রাহিমের তৃতীয় স্ত্রীর চুমকি আরো বলেন, তার স্বামী ইব্রাহিম একটি পিকআপ গাড়ি ক্রয় করেন এবং সেই গাড়ির দায়িত্ব দেন মোরশেদা বিবির স্বামীকে।
শুধু এখানেই শেষ নয়। জানা যায়, নওগাঁর নিয়ামতপুরে বেশ কিছুদিন আগেও অন্য একটি মেয়ের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কের সময় হাতেনাতে ধরেন তার তৃতীয় স্ত্রী চুমকি।
চিফ টিভির অনুসন্ধানে জানা যায়, এই পুলিশ সদস্যের রয়েছে একাধিক স্ত্রী। তিনি একে একে করেছেন ৩টি বিবাহ। পাবনার সাথিয়া উপজেলায় তার বিবাহিত ২য় স্ত্রী বসবাস করেন ও বিভিন্নভাবে খোজা হলেও মেলেনী প্রথম স্ত্রীর সন্ধান। বর্তমান এই পুলিশ সদস্য তৃতীয় স্ত্রীকে চুমকিকে নিয়ে বসবাস করেছেন বগুড়ায়। সাব ইন্সপেক্টর ইব্রাহিম প্রথম বিয়ে করার পর ডিভোর্স দেন পরে সেই স্ত্রীকেই আবারো পারিবারিকভাবে করেন বিবাহ।
নারী কেলেংকারীর বিষয়ে সাব ইন্সপেক্টর ইব্রাহিমের স্ত্রী চুকমি ইতিমধ্যে শিবগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ ও সার্কেল অফিসারসহ বিভিন্ন মহলে করেছেন অভিযোগ এমনটাই জানান তিনি।
এছাড়াও আরো একটি ভিডিওতে পরিস্কার ভাবে দেখা যায়,সাব ইন্সপেক্টর ইব্রাহিমের তৃতীয় স্ত্রী চুমকি বেগম পরকীয়া প্রেমিকা মোরশেদা বিবি ও তার স্বামীকে ডেকে নিয়ে একটি স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিতে দেখা যায়। সেখানে শর্ত ছিলো সাব ইন্সপেক্টর ইব্রাহিম ও তার প্রেমিকা মোরশেদার মধ্যে যেনো আর কোন ধরনের যোগাযোগ না হয়। যদি এমনটা হয় তাহলে সেই মহিলা ও মহিলার স্বামীর বিরুদ্ধে নেয়া হবে কঠোর ব্যবস্থা।
এছাড়াও চিফ টিভির অনুসন্ধানে উঠে এসেছে আরো একটি ঘটনা। নাম প্রকাশ করতে অনিচ্ছুক শিবগঞ্জ উপজেলায় বসবাসরত এক ব্যক্তি জানান,সাব ইন্সপেক্টর ইব্রাহিম রাতের আঁধারে রাস্তা থেকে তাকে উঠিয়ে নিয়ে যায় নির্জন ফাঁকা একটি জায়গায়। সেখানে নিয়ে গিয়ে তাকে বিভিন্নভাবে হুমকি ধামকি দেখিয়ে করেন টাকা দাবি। পরে ভুক্তভোগী সেই ব্যক্তি মান সম্মান ও ভয়ে ১৭ হাজার টাকা দিয়ে সেখান থেকে ফিরে আসেন।
সাব ইন্সপেক্টর ইব্রাহিমের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের বিষয়ে তার কছে জানতে, তার ব্যবহৃত ফোন নাম্বারে একাধিকবার ফোন দেওয়ার পর, একটা সময় তিনি কল রিসিভ করেন এবং ঘটনা গুলোর বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে ফোন কেটে দেন। পরবর্তীতে আবারো কল করলে তিনি তার স্ত্রীকে দিয়ে ফোন রিসিভ করান এবং গালিগালাজসহ বিভিন্নভাবে হুমকি ধামকী দেন তার স্ত্রী।
এ বিষয়টি নিয়ে শিবগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুর রউফ বলেন, সাব ইন্সপেক্টর ইব্রাহিমের স্ত্রী মৌখিক ভাবে বলেন তাদের দাম্পত্য জীবনে কলহ চলছে সেটি যেন ঠিকঠাক করে দেই এমনটাই বলছিলেন আমাকে। পরে তাদের ভিতরে কি হয়েছে সেই বিষয়টা আমার জানা নেই। সাম্প্রতিক সাব ইন্সপেক্টর ইব্রাহিমকে বদলি করা হয়েছে। তিনি খুব শীঘ্রই শিবগঞ্জ থানা থেকে কর্ম দিবস শেষ করে যেখানে বদলী হয়েছেন, সেখানে চলে যাবেন।
কোন মন্তব্য নেই