ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা, ঘটনার পর থেকেই পলাতক - Chief TV News
বিশেষ প্রতিনিধি, বগুড়াঃ
বগুড়ার গাবতলীতে আদালতে দায়েরকৃত মামলা তুলে না নেয়ায় বাদিকে মারপিট করে আসবাবপত্র ভাংচুর এবং বসতবাড়িতে অগ্নিসংযোগ দেওয়ার ঘটনায় সুখানপুকুর ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্য নুরুল ইসলাম উজ্জ্বলসহ আরও ৫ জনের বিরুদ্ধে গাবতলী মডেল থানায় মামলা করা হয়েছে। অন্যান্যরা হলেন সুখানপুকুর ইউনিয়নের আমতলী পাড়ার মকবুল ইসলামের ছেলে ইউপি সদস্য নুরুল ইসলাম উজ্জল হোসেন (৪৫) সুখানপুকুর ইউনিয়নের ডিহিডঙর গ্রামের হাফিজার রহমান ছেলে সোহেল (৩৫) ও রাজু মিয়া (৩০) মৃত লাল চাঁন মন্ডলের ছেলে বেল্লাল হোসেন (৬৫) মৃত ইসমাইলের ছেলে জেল্লাল। এছাড়াও ঘটনার সময় উপস্থিত থাকা আরও অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করা হয়েছে।
জানা যায়, গত ১ জুন গাবতলীর সুখানপুকুর ইউনিয়নের ডিহিডওর গ্রামের আনিছার প্রামানিকের মেয়ে রাশেদা বেগম (৩০) একই গ্রামের মুকুলের ছেলে সাদ্দামের বিরুদ্ধে অর্থ লেনদেন সংক্রান্ত বিষয়ে বগুড়া আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। তারই প্রেক্ষিতে সাদ্দামের দুলাভাই ইউপি সদস্য নুরুল ইসলাম উজ্জ্বল মামলা তুলে নিতে রাশেদা ও রাশেদার পরিবারকে একাধিকবার হুমকি-ধামকি দিচ্ছিলেন। এরই এক পর্যায়ে গত ২৫ জুলাই আনুমানিক রাত ৯ টায় সাদ্দাম ও তার লোকজন রাশেদাসহ তার পরিবারের লোকজনকে মারপিট করে।
এ ঘটনায় রাশেদা বাদি হয়ে ২৬ জুলাই রাতে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন। এতে আরও ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে সাদ্দাম ও তার দুলাভাই ইউপি সদস্য নুরুল ইসলাম উজ্জ্বল। এরই জের ধরে গত ৩০ জুলাই আনুমানিক রাত ৮ টায় সাদ্দামের দুলাভাই প্রবাভশালী ইউপি সদস্য নুরুল ইসলাম উজ্জ্বল দলবল নিয়ে রাশেদার বাড়িতে হামলা চালায়। হামলাকারীরা রাশেদা ও তার বাবা আনিছার (৬০), বৃদ্ধা মা অমেলা (৫৫) কে মারপিট করে জখম করে।
পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় তাদের তিনজনকে রাতেই গাবতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কপপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এদিকে বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে রাশেদার বাড়িতে আগুন দেয় প্রতিপক্ষরা। টহলরত পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস আগুন নেভানোর চেষ্টা করলেও রাশেদার ৩টি ঘর, ফ্রিজ, টিভিসহ বিভিন্ন আসবাবপত্র আগুনে পুড়ে যায়।
এ ঘটনায় গত ৩১ জুলাই প্রাথমিকভাবে গাবতলী মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দেন রাশেদা। অভিযোগ তদন্ত শেষে ২ আগস্ট শুক্রবার অভিযোগটি মামলাতে পরিণত হয়। এদিকে মামলা হবার আগে থেকেই ইউপি সদস্য নুরুল ইসলাম উজ্জ্বল গা ঢাকা দিয়েছেন বলে অভিযোগ ওঠে।
এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গাবতলী মডেল থানার পাশাপাশি গাবতলী উপজেলার চেয়ারম্যান অরুন কান্তি রায় সিটন ও গাবতলী-শাজাহানপুরের এমপি ডাক্তার মোস্তফা আলম নান্নুকেও লিখিত অভিযোগ দেন ভুক্তভোগী পরিবার।
লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর পরই উপজেলা চেয়ারম্যান অরুন কান্তি রায় সিটন হাসপাতালে গিয়ে আহতদের সাথে সাক্ষাৎ করেন। তিনি বলেন-, ভুক্তভোগীদের অভিযোগে শুনেছি ইউপি সদস্য নুরুল ইসলাম উজ্জ্বল ও তার দলবল ঘটানাটি ঘটিয়েছে। তিনি একজন ইউপি সদস্য হয়ে এই ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড যদি ঘটিয়ে থাকেন তাহলে তা খুবই নেক্কারজনক। এর আগেও ওনার নামে অভিযোগ পেয়েছি। আমরা দ্রুত ঘটনার সত্যতা যাচাই করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবো এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে সরকারি ও আমার ব্যাক্তিগত তহবিল থেকে সহযোগিতার চেষ্টা করবো।
এদিকে গাবতলী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশিক ইকবাল বলেন, ঘটনার রাতেই খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছিলাম। পরে ভুক্তভোগীরা লিখিত অভিযোগ দিলে আমি নিজেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করি। ঘটনার সাথে যারা জড়িত তাদেরকে দ্রুত আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।

কোন মন্তব্য নেই