শারীরিক সম্পর্কের নাটক সাজিয়ে টাকা দাবীর অভিযোগ মহিলা মেম্বারের বিরুদ্ধে - Chief TV - চিফ টিভি
![]() |
ছবিঃ সংগৃহীত |
বগুড়ায় মহিলা মেম্বারের দেহ ব্যবসা, প্রেমের প্রলোভনে ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের ভিডিও ধারণ করে ব্ল্যাকমেইলের মাধ্যমে হাতিয়ে নেন লাখ লাখ টাকা। আর এই কাজটি করে সঙ্গবদ্ধ একটি চক্রের মাধ্যমে। এমনি অভিযোগ উঠেছে বগুড়ার গাবতলী উপজেলার সুখানপুকুর ইউনিয়ন পরিষদের ৪,৫ ও ৬ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী সদস্য ববিতা বেগমে (৩৮) এর বিরুদ্ধে।
ববিতা বেগম হলেন, গাবতলী উপজেলার সুখানপুকুর ইউনিয়নের কুরিরপাড়া গ্রামের পিন্টু মিয়ার স্ত্রী এবং গত নির্বাচনে ৪,৫ ও ৬ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য নির্বাচিত হন।
জানা যায়, ববিতা একের পর এক ছেলেকে ফাঁদে ফেলে সুকৌশলে এবং মোটা অংকের টাকা নিয়ে ছটকে যাওয়াই তার কাজ। এর আগে তার নামে বিভিন্ন ছেলেদেরকে জিম্মি করে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। সর্বশেষ গত ২২শে মার্চ শুক্রবার বগুড়ার গাবতলী উপজেলার সুকানপুকুর ইউনিয়নের নিজ কাকড়া এলাকার সুখান পুকুর বাজারের হোটেল ব্যবসায়ী এনদাকে কেন্দ্র করে এক চাঞ্চল্যকর ঘটনার সৃষ্টি হয়। ববিতা ও এনদাকে কেন্দ্র করে এই ঘটনার পেছনে রয়েছে এক অশুভ রাজনীতির সুকৌশলের ছোঁয়া। এনদার সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কের ভয় দেখিয়ে মোটরসাইকেল ও মোটা অংকের টাকা নেয় ববিতা ও ইউপি সদস্য উজ্জল ও পোলান্ডসহ অন্যান্য সহযোগীরা।
ভুক্তভোগী এনদা চিফ টিভিকে বলেন,ইউপি মহিলা সদস্য ববিতা গত ২২ শে মার্চ শুক্রবার হোটেল ব্যবসায়ী এনদাদের কাছ থেকে ৫০০ টাকা ধার চায়। এনদা টাকা দিতে রাজি না হলে বিভিন্ন হুমকি দেয়। এরই প্রেক্ষিতে হোটেল ব্যবসায়ী এনদা রাতে হোটেল বন্ধ করে তার মোটরসাইকেল যোগে বাড়ির পথে ফিরছিলেন। তখন পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ইউপি মহিলা সদস্য ববিতা ও ইউপি সদস্য উজ্জল ও পলান্ডসহ ১৫ জন এনদাকে বিলের মাঝখানে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে আটকিয়ে তার থেকে তার মোটরসাইকেল ছিনিয়ে নেন। পরে থাকে জোরপূর্বক কাঁধে করে নির্জন এক ভুট্টা ক্ষেত্রে নিয়ে যায়। এ সময় ইউপি সদস্য ববিতার সঙ্গে ছিলেন, পলান্ড,সনি, হৃদয়, সুখান পুকুর ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্য উজ্জল, রুবেল, মেহেদী, রবিউল, এবং আফিসহ তাদের চক্রের অন্যান্য সদস্যরা ।
এক সময় তাকে মারধর ও হুমকি দিয়ে বিবস্ত্র করে ববিতার সঙ্গে অনৈতিক কাজের মতো দৃশ্য তৈরির মাধ্যমে সুকৌশলে ভিডিও ধারণ করে। সেই ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়াতে ও তার পরিবারকে দেখানোর এবং মৃত্যুর ভয় দেখিয়ে তার কাছ থেকে ববিতার সুপারিশে ৩ লক্ষ টাকা দাবি করে।
জীবন এবং সম্মান বাঁচানোর জন্য তার কাছে থাকা ১ লক্ষ ১০ হাজার টাকা পলান্ডকে দিয়েছে তার ছিনতাইকৃত গাড়ি নিয়ে সেখান থেকে কোনরকম বেঁচে ফেরেন।
তিনি আরো বলেন,টাকা নেওয়ার পরেও অভিযুক্ত মাস্টারমাইন্ড ইউপি সদস্য উজ্জল ও পলান্ড তার দোকানে এসে ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে আবারও টাকা চেয়ে বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্ছে বলে জানান তিনি।
আরেক ভুক্তভোগী একই এলাকার শচীন চন্দ্র দাসের ছেলে রতন চন্দ্র দাস বলেন,নির্বাচনের সময় তার কাছ থেকে টাকা ধার নেয় ববিতা। ধারের টাকা ফেরত চাইলে ভুক্তভোগোকে সুকৌশলে বাড়িতে ডেকে নিয়ে তার সঙ্গে অনৈতিক কাজ করার প্রস্তাব দেয়। তার কথায় রাজি না হলে ববিতা ও মাস্টারমাইন্ড উজ্জল ও পলান্ডসহ তার সহযোগীরা রতনকে বিভিন্নভাবে হুমকী ও মারধোরের মাধ্যমে বিবস্ত্র করে মোবাইল ফোনে ভিডিও ও ছবি ধারণ করেন এবং ধারণকৃত ভিডিও ও ছবিগুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে তার কাছ থেকে ২লক্ষ টাকা দাবি করেন। পরে দেড় লাখ টাকার বিনিময়ে তাকে ছাড়া হলেও ধারণকৃত ভিডিও ও ছবিগুলো ডিলিট করেনা তারা। এখনো তাকে বিভিন্নভাবে ববিতা,উজ্জল ও পলান্ড প্রতিনিয়ত হুমকি দিচ্ছেন।
এ ছাড়াও অনুসন্ধানে জানা যায়, মহিলা মেম্বার ববিতা অনেকদিন যাবত এলাকাতে বিভিন্ন ধরনের অপকর্ম করে আসছেন। নিজ এলাকায় এবং এলাকার বাহিরে বিভিন্ন ব্যক্তিবর্গের সঙ্গে তার এমন অনৈতিক কর্যক্রমের কথা জানা যায়।
এর আগেও তিনি একটি মামলায় জেল হাজতে ছিলেন। জেলহাজত থেকে বেরিয়ে তিনি আরো বেশি বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ব্যক্তির সাথে নানাভাবে ব্যক্তিগত ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলাই যেনো তার প্রধান কাজ। এসব ঘনিষ্ঠ হওয়া ব্যক্তিদের সঙ্গে ভিডিও কলে নিয়মিত যোগাযোগ রাখেন তিনি । পরে সুকৌশলে ডেকে নিয়ে একান্ত মুহূর্তের ব্যক্তিগত ছবি ও ভিডিও ধারণ করে তা ভাইরাল করে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে নিয়মিত ব্ল্যাকমেইল করেন। এভাবে লোকজনের সঙ্গে অনৈতিক কাজ করে প্রচুর টাকা-পয়সা হাতিয়ে নিয়েছেন তিনি।
এ বিষয়ে ইউপি সদস্য ববিতার কাছে জানতে চাইলে তিনি চিফ টিভিকে বলেন, তার বিরুদ্ধে আনা সকল অভিযোগ বানোয়াট ভিত্তিহীন। ষড়যন্ত্রমূলকভাবে তাকে ফাঁসানো হচ্ছে। তিনি জানেনও না এমন ঘটনা ঘটেছে। একটি চক্র তাকে ইচ্ছাকৃতভাবে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে।
তার দাবি, সোশ্যাল মিডিয়া থেকে তার ছবি সংগ্রহ করে ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহার করে তার ছবি ইডিট করে ভিডিওতে দেখানো হয়েছে। রতন বা এনদার সঙ্গে তার কোন ব্যক্তিগত শত্রুতা নেই। তাকে ফাঁসানো এবং তার সম্মানে আঘাত আনার জন্য এটি একটি পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র বলে তিনি জানান।
উল্লেখ্যঃ বেশ কিছুদিন আগেও এই ইউপি সদস্য ববিতার একটি মাদকদ্রব্য সেবন ভিডিও চিফ টিভিতে প্রকাশ পায়। ববিতাকে নিয়ে চিফ টিভির আরো একটি ভুক্তভোগী এই ববিতার নামে অভিযোগ করেছেন এ নিয়ে চিফ টিভির ২য় পর্বে থাকছে আরো একটি প্রতিবেন।
কোন মন্তব্য নেই