হামাসের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব, গড়িমসি নেতানিয়াহুর - Chief TV - চিফ টিভি
![]() |
ছবি-প্রতিনিধি |
গাজায় যুদ্ধবিরতি এবং জিম্মি মুক্তির লক্ষ্যে ফের প্রস্তাব দিয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। তবে এই প্রস্তাবে এখনও সাড়া দেয়নি ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী। সিএনএনের খবরে বলা হয়েছে, হামাস মধ্যস্থতাকারী দেশগুলোর কাছে ইসরাইলের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবের বিশ্লেষণ জমা দিয়েছেন। ওই বিশ্লেষণে তারা গাজায় সর্বাত্মক যুদ্ধবিরতির কথা জানিয়েছে।
ইসরাইলের একটি সূত্র বলছে, হামাসের এই প্রস্তাবের বিষয়ে এখনও কোনো সবুজ সংকেত দেয়নি বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। তবে নেতানিয়াহুর রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠকের পর এ বিষয়ে স্পষ্ট জানা যাবে বলে জানিয়েছে সূত্রটি।
সিএনএনের খবরে বলা হয়, যুদ্ধবিরতির লক্ষ্যে নতুন করে যুদ্ধবিরতির যে পরিকল্পনা প্রস্তাব করেছে হামাস তাতে এখনও সায় দেয়নি নেতানিয়াহু। এতে যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়নে নেতানিয়াহুর গড়িমসি স্পষ্ট হয়েছে বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। নেতানিয়াহুর সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে ইসরাইলের মধ্যস্থতাকারী নেতৃবৃন্দ। জিম্মি এবং ইসরাইলের কারাগারে বন্দিদের মুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত হতে আরও কয়েক সপ্তাহ সময় লাগতে পারে বলেছেন তারা। হামাস তাদের প্রস্তাবে বরাবরের মতো গাজা থেকে ইসরাইলি সেনা প্রত্যাহারের বিষয় এবং ইসরাইলি কারাগার থেকে ফিলিস্তিনিদের মুক্তির বিষয়টিতে জোর দিয়েছে।
সূত্রের বরাতে সিএনএন আরও জানিয়েছে, ইসরাইলের মধ্যস্থতাকারীরা বিস্তারিত আলোচনার এই পর্যায়ে প্রবেশ করবেন কিনা সে বিষয়ে একটি আলোচনাসভা করবেন নেতানিয়াহু ও তার রাজনৈতিক দল।
এরপর হামাসের নতুন প্রস্তাবের বিষয়ে ইসরাইলের অভিমত স্পষ্টভাবে জানা যাবে। হামাসের একটি সূত্র জানিয়েছে, তারা গাজায় পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধবিরতির দাবি পুনর্ব্যক্ত করেছে। এ বিষয়ে মধ্যস্থতাকারী দেশ কাতার এবং মিশরের কাছে তারা তাদের প্রস্তাব পেশ করেছে।
হামাসের রাজনৈতিক শাখার সদস্য বাসেম নাইম সিএনএনকে বলেছেন, আমরা গাজায় স্থায়ী নিরাপত্তার লক্ষ্যে আমাদের দাবি পেশ করেছি যা গাজায় সম্পূর্ণ যুদ্ধবিরতি এবং সেখান থেকে ইসরাইলি বাহিনী প্রত্যাহারের বিষয়টি স্পষ্ট করেছে। ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে আগ্রাসন বন্ধ করার লক্ষ্যে মধ্যস্থতাকারীদের নতুন করে কিছু প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে বলে পৃথক আরেক বিবৃতিতে জানিয়েছে হামাস। সংগঠনটি ইঙ্গিত দিয়েছে যে তারা ইসরাইলের প্রস্তাবটি ইতিবাচকভাবে বিশ্লেষণ করেছে।
গাজায় গত নয় মাস যাবত নৃশংস হত্যাকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে ইসরাইল। হামাস যেকোনো মূল্যে উপত্যকাটিতে এই যুদ্ধের অবসান চায়। সেলক্ষ্যেই সংগঠনটির রাজনৈতিক শাখার প্রধান ইসমাইল হানিয়ে কাতার এবং মিশরের মধ্যস্থতাকারীদের সঙ্গে তার আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন। তারা এমন একটি চুক্তিতে পৌঁছাতে চাচ্ছে যার মাধ্যমে গাজায় চিরদিনের জন্য যুদ্ধ বন্ধ হবে। তবে এ বিষয়ে বরাবরই তালবাহানা করেছে নেতানিয়াহু। তিনি তার বাহিনীকে ক্রমান্বয়ে গাজায় হামলা জোরদার করার নির্দেশ দিয়েছেন। নেতানিয়াহুর নির্দেশে গাজায় এ পর্যন্ত প্রায় ৩৮ হাজার লোক নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৮০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি। হতাহতের বেশির ভাগই নারী এবং শিশু। জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে গণহত্যার দায়ে নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করার আবেদন জানিয়েছিলেন প্রসিকিউটর করিম খান। তবে এতে ওই আদালতের ব্যর্থতাই স্পষ্ট হয়েছে। কারণ আদালতকে কোনরকম তোয়াক্কাই করেনি নেতানিয়াহু। তিনি গাজায় সর্বাত্মক যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়ে রেখেছেন। এখন দেখার বিষয় হামাসের নতুন পর্যালোচনার বিষয়ে কেমন প্রতিক্রিয়া দেন নেতানিয়াহু।
কোন মন্তব্য নেই